বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার জোড়গাছা ইউনিয়নের গোসাইবাড়ি গ্রামে কবুতরের বাচ্চা চুরির মতো তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত ৭ মে রবিবার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে উভয় পক্ষের মধ্যে মারপিট ও বাড়িঘর ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে।
এ ঘটনায় ওই গ্রামের মো. দুদু খন্দকারের ছেলে মো. জুল্লু খন্দকার বাদী হয়ে প্রতিপক্ষের ৫ জনের নাম উল্লেখসহ ২/৩ জনকে অজ্ঞাত রেখে ঘটনার দিনই স্থানীয় থানায় অভিযোগ দায়ের করে।
অভিযুক্তরা হলেন একই গ্রামের বাবলু খন্দকারের ছেলে লিটন মিয়া(২৭), রাজু মিয়া(২০), বাবলুর স্ত্রী অপিতন বেগম(৪২), দুলু মন্ডলের স্ত্রী আখিরন বেগম(৩২) ও তার ছেলে ইউসুফ আলী(১৯)। জুল্লু খন্দকারের থানায় অভিযোগ দেওয়ার বিষয়টি জানতে পেরে পরের দিন বিবাদী পক্ষের বাবলু খন্দকার বাদী পক্ষের ৫জনের নামে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
সরেজমিনে ও জুল্লুর অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, ঘটনার দিন দুলু মন্ডলের ছেলে (বাবলুর নাতি) ইউসুফ জুল্লুর চাচাতো ভাই শিপনের বাড়ি থেকে একজোড়া কবুতরের বাচ্চা চুরি করে নিয়ে যাওয়ার সময় শিপনের স্ত্রী শাহনাজ দেখে ফেলে। বিষয়টি শাহনাজ ইউসুফের বাড়িতে গিয়ে তার অভিভাবকদের অবগত করলে তারা উল্টো শাহনাজকে কবুতর চুরির অপবাদ দেওয়ার অভিযোগে অখাত্য ভাষায় গালিগালাজ করে। গালি খেয়ে শাহনাজ বাড়ি ফিরে আসে। এরপর একইদিনে কবুতর চুরির অপবাদ সইতে না পেরে অভিযুক্তরা ও অজ্ঞাত ২/৩জনসহ দলবদ্ধ হয়ে হাতে লাঠিসোডা, লোহার রড, ধারালো ছুরি নিয়ে শিপনের বাড়িতে হামলা চালিয়ে মারপিটসহ বাড়িঘর ভাংচুর করতে থাকে। এ সময় হৈচৈ ও টিনের শব্দ শুনে সালেহা, মাঠে ধান কাটতে থাকা জুল্লুর বাবা দুদু খন্দকার এবং পাশের বাড়ির জুল্লুর স্ত্রী সোনালী বেগম এগিয়ে এসে বাড়িঘর ভাংচুরসহ মারপিটের বিষয়টি জানতে চাইলে তাদেরকেও মারপিট করে রক্তাক্ত জখম করে। মারপিটে আহত হওয়া শাহনাজ, সালেহা ও দুদু খন্দকার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে চিকিৎসা নিয়েছে। শুধু তাই নয় এ সময় হামলাকারীরা সোনালী বেগম, শাহনাজ বেগম ও সালেহা বেগমের পড়নের কাপড় টানা হেচরা করে শ্লীলতাহানী ঘটানোর মতো জঘন্য অপরাধ করে। এছাড়াও হামলাকারীরা সোনালী বেগমের গলায় ৪৫ হাজার টাকা মূল্যের ৮ আনী স্বর্ণের চেইন ছিড়ে নিয়েছে বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে প্রতিপক্ষের বাবলু খন্দকারের স্ত্রী অপিতন বেগম জানান, কবুতর চুরির অপবাদের প্রতিবাদ করায়, জুল্লু-শিপনদের পরিবারের লোকজন আমাদের বাড়িঘর ভাংচুর সহ মারপিট করেছে।
এ ঘটনায় গ্রামবাসিদের অনেকেই জানান, জুল্লু শিপনসহ কয়েকটি পরিবারের লোকজনের বাড়িতে যাতায়াতের রাস্তা বাবলু খন্দকার শুধু কোন রকমে একজন মানুষ যাওয়াআসা করতে পারবে এতটুকু জায়গা রেখে বাকিটুকু জায়গায় খড়ের গাঁদা তুলেছে। মূলত এ বিষয়টির জন্যই দুই পরিবারের মধ্যে জগড়াঝাটি লেগেই থাকে। যেহেতু দুই পক্ষই থানায় অভিযোগ দিয়েছে তাই উভয় পক্ষকে থানায় ডেকে ভুক্তভোগীদের বাড়িতে যাতায়াতের প্রতিবন্ধকতা দূর করাসহ বর্তমানেম কলহের আপোষ মিমাংসা করে দুই পরিবারের মধ্যে শান্তি স্থাপনের জন্য থানা পুলিশের প্রতি আকুল আবেদন জানিয়েছেন শান্তিপ্রিয় গ্রামবাসি।
এ ব্যাপারে সোনাতলা থানা অফিসার ইনচার্জ সৈকত দু’পক্ষে অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, দুই পরিবারের মধ্যে শান্তি রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
Posted ৫:৪৯ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ১২ মে ২০২৩
Alokito Bogura || Online Newspaper | MTi SHOPON MAHMUD