সাজু মিয়া, শিবগঞ্জ (বগুড়া) প্রতিনিধি: মুসলমানদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব ঈদ-উল-ফিতর। সেমাই ছাড়া এ ঈদ যেন বড্ড বেমানান। ঈদ আর লাচ্ছা সেমাই যেন একে অপরের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হয়ে উঠেছে। লাচ্ছা ছাড়া এ ঈদ কল্পনাও করা যায় না । সেই লাচ্ছা সেমাইয়ের ব্যবসায় ভাগ্য বদলিয়েছে শিবগঞ্জের মোল্লা ছামছুলের।
১৯৭৯ সালে ছাত্রজীবনে দুই হাজার টাকা দিয়ে অন্যের দোকান থেকে সেমাই কিনে ফেরী করে হাটবাজারে বিক্রি করতো। এতে যে লাভ হতো তা দিয়েই সে তার ব্যবসার পরিসর বাড়াতে থাকে। ১৯৯৬ সাল থেকে সে নিজেই সেমাই বানানো শেখে। এরপর নিজের বানানো সেমাই শিবগঞ্জের বিভিন্ন হাটে বাজারে বিক্রি করে। এতে তার লাভ বেশি হতো। সময়ের ব্যবধানে তার লাচ্ছা সেমাইয়ের সুনাম সুখ্যাতি ছড়িয়ে পরে সারা উপজেলায়। সে শিবগঞ্জ পৌর এলাকায় তার নিজ বাড়ি বানাইলে গড়ে তোলেন তার এই সেমাইয়ের ব্যবসা। সে ২০০৮সালে মেসার্স ইসলাম ট্রেডার্স ও মোল্লা ফুড প্রোডাক্টস্ নামে বিএসটিআইয়ের অনুমোদন পায়। পাশাপাশি অন্য সকল অনুমোদনও নেন তিনি। এরপর ২০১০ সাল পর্যন্ত মোল্লা ফুড প্রোডাক্টস্ এর সেমাই বগুড়া ও জয়পুরহাট জেলায় ব্যাপক সাড়া ফেলে। এর পর তাকে আর বেগ পেতে হয়নি। ৩১বছরের তার এই সেমাইয়ের ব্যবসা কালের বির্বতনে তাকে ব্যপক সফলতা এনে দেয়।
সরেজমিনে তার সেমাইয়ের কারখায় গিয়ে দেখা যায়, বিশাল পরিসরে প্রায় ৩০জনের মতো শ্রমিক কাজ করছে নিরলস ভাবে। কিছু শ্রমিক সেমাইয়ের খামির বানাচ্ছে, কিছু শ্রমিক সেমাই ভাঁজছে, কিছু শ্রমিক সেমাই খাঁচায় তুলছে।
মোল্লা ছামছুল এর ছেলে আলোকিত বগুড়া’র প্রতিবেদককে বলেন, ২০ কেজি করে ডালডা ভাজা খাঁচির লাচ্চা সেমাই ছাড়াও ৮প্রকারের ডালডা ভাজা ও ঘিয়ে ভাজা লাচ্ছা সেমাই বাজারে বিক্রি হচ্ছে। এবার ময়দা, চিনি, ডালডা ও ঘীর দাম বেশি হওয়ায় ব্যবসা ভালো হচ্ছেনা। আগে দৈনিক ২’শ খাঁচি লাচ্ছা সেমাই বিক্রি হলেও এবার তা কমে ১৫০ খাঁচি করে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি খাঁচি ডালডা ভাজা লাচ্চা সেমাই ২’হাজার থেকে-২২’শ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে।
মোল্লা ছামছুল আলোকিত বগুড়া’র প্রতিবেদককে বলেন, আমি ছাত্রাবস্থায় এই সেমাইয়ের ব্যবসার সাথে যুক্ত আছি। প্রমে অন্যর কাছ েেক কিনে ফেরি করে বিভিন্ন হাটবাজারে সেমাই বিক্রি করতাম। একটা সময় পর আমি নিজেই সেমাই বানানো শিখি। আমি ২০০০টাকা দিয়ে এ ব্যবসা শুরু করি। ৩১ বছরের ব্যবধানে আমি কারখানাটিকে প্রতিষ্ঠিত রূপ দিতে পেরেছি। আমার প্রতিষ্ঠানের তৈরী লাচ্ছা সেমাই বগুড়া, জয়পুরহাট, নাটোর, সিরাজগঞ্জ, গাইবান্ধা, রংপুর, নওগাঁ, ঢাকা ও চট্টগ্রামের পাইকারি ব্যবসায়ীরা ক্রয় করে নিয়ে যায়। বছরের অন্য সময়ে দিনে গড়ে ১০হাজার টাকার সেমাই বিক্রি হলেও ঈদুল ফিতর উপলক্ষে রমজানে প্রতিদিন গড়ে দু’লক্ষ টাকার সেমাই বিক্রি হয়। আমার সেমাইয়ের কারখানায় স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে, অটোমেটিক মেশিনে এবং দক্ষ কারিগর দ্বারা সেমাই তৈরী করা হয়।
চট্টগ্রামের সেমাই ব্যবসায়ী হায়াৎ উদ্দীন বলেন, আমি প্রতি ঈদে গড়ে ২লক্ষ টাকার সেমাই মোল্লা ফুড প্রোডাক্ট থেকে কিনে চট্টগ্রামের বিভিন্ন জায়গায় খুচড়া বিক্রি করি।
উপজেলার সুলতানপুরের পাইকারী ব্যবসায়ী রুবেল মিয়া বলেন, আমি প্রতি ঈদে মোল্লা ফুড প্রোডাক্ট এর ৫০হাজার টাকার বিভিন্ন আইটিমের সেমাই কিনে খুচড়া বাজারে বিক্রি করি।
Posted ১১:২২ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ১০ এপ্রিল ২০২৩
Alokito Bogura || Online Newspaper | MTi SHOPON MAHMUD