শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি: ‘আপনারা যতই বলেন মুখে মুখে, শেরপুরের সাংবাদিকরা- আপনারা কেউ জনকল্যাণে কাজ করেন না। তাদের থেকে আমি ওরকম কিছু পাই নাই, কারণ আমার অভিজ্ঞতা সেটাই বলে, আমার অভিজ্ঞতা তো খারাপ, আমাকে তো আপনারা ভালো অভিজ্ঞতা তৈরি হওয়ার সুযোগ দেন নাই।’ বগুড়ার শেরপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে সানজিদা সুলতানা যোগদানের দেড় মাসের মাথায় স্থানীয় কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীদের নিয়ে এমন বিরূপ মন্তব্য করেন।
শুক্রবার (০৯ ডিসেম্বর) বিকালে শেরপুরের শাহ বন্দেগী ইউনিয়নের উচরং গ্রামে আবাদি জমির উপর বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনের টাওয়ার নির্মাণকাজ নিয়ে অভিযোগের তদন্তকালে শতাধিক লোকজনের উপস্থিতিতে এমন সাংবাদিকদের নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেন তিনি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার এমন বিরূপ মন্তব্যের প্রেক্ষিতে হতবাক হয়ে যায় উপস্থিত সকলে ও উপজেলার কর্মরত সকল গণমাধ্যমকর্মীরা। ইউএনও’র এহেন মন্তব্যের প্রেক্ষিতে ও সাংবাদিকদের পেশাকে হেয় প্রতিপন্নের চেষ্টা বলে প্রতিয়মান হওয়ায় স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
এ ঘটনার প্রেক্ষিতে ০৯ ডিসেম্বর শুক্রবার রাতে শেরপুর উপজেলা প্রেসক্লাবে এক জরুরী সভায় মিলিত হয় স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীরা। সভায় সকলের সিদ্ধান্তক্রমে স্থানীয় সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব পালন নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার এমন বিরূপ মন্তব্যের প্রতি তীব্র প্রতিবাদ, নিন্দা জ্ঞাপনসহ তার দপ্তরের সকল সংবাদ বর্জনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
উল্লেখ্য, বিদ্যুতের চাহিদাপূরনের লক্ষ্যে বড় পুকুড়িয়া- বগুড়া-কালিয়াকৈর ৪০০ কেভি লাইন প্রকল্পের আওতায় সরকার ভারত, নেপাল ও ভুটান থেকে বিদ্যুৎ আমদানির জন্য ২৪৩.৫৩ কিলোমিটার ৪০০ কেভি ডাবল সার্কিট উচ্চ ভোল্টেজের সঞ্চালন লাইন নির্মান উদ্যেগ নিয়েছে। তারই অংশ হিসেবে পাওয়ার গ্রীড কম্পানি অব বাংলাদেশ লিমিটেড (পিজিসিবি) উপজেলার উচরং গ্রামে আবাদি জমির উপর বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনের টাওয়ার নির্মানের কাজ শুরু করেছে। বিদ্যুৎ আইন ২০১৮ অনুযায়ি ক্ষতিগ্রস্থ জমির মালিক ফসল ও ভূমির ক্ষতিপূরণ পাওয়ার কথা। কিন্তু আইন উপেক্ষা করে টাওয়ার নির্মানের কাজ করছে ঠিকাদরি প্রতিষ্ঠান।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগীরা ডিসি অফিস ও ইউএনও বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন এবং বগুড়া প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন। তাই ০৯ ডিসেম্বর শুক্রবার বিকালে বিষয়টি সুরাহার এবং তদন্তের জন্য থানা পুুলিশ এবং উপজেলা প্রশাসনের প্রধান কর্মকর্তা ইউএনও ঘটনাস্থলে যান। সেসময় উপস্থিত সাংবাদিকরা সংশ্লিষ্ট আইন নিয়ে যুক্তি উপস্থান করলে ইউএনও সানজিদা সুলতানা প্রকাশ্যে এরূপ বিরুপ মন্তব্য করেন। এসময় শেরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ আতাউর রহমান খন্দকার, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদসহ শতাধিক এলাকাবাসী উপস্থিত ছিলেন।
Posted ৭:৫৯ অপরাহ্ণ | শনিবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২২
Alokito Bogura || Online Newspaper | MTi SHOPON MAHMUD