শুক্রবার ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম
শিরোনাম

শিবগঞ্জে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ

গোলাম রব্বানী শিপন, স্টাফ রিপোর্টার   বুধবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৩
124 বার পঠিত
শিবগঞ্জে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ

বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নের ধাওয়াগীর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন ওই বিদ্যালয়ের ৫ সহকারী শিক্ষক।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ১৯৯৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় উপজেলার ধাওয়াগী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়। তৎকালীন থেকেই প্রতিষ্ঠানটিতে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করে আসছেন শহিদুল ইসলাম (মর্তাজা)। এ বিদ্যালয়ে ২০/২২ বছর ধরে বিনা বেতন ভাতা ছাড়াই শিক্ষকতা করে আসছেন ১২ জন সহকারী শিক্ষক। উক্ত বিদ্যালয়টি ২০১৯ সালে এমপিওভুক্ত হয়।


সমাজ বিজ্ঞান, ইংরেজি বিভাগের মোজাফফর হোসেন, জীব বিজ্ঞান বিভাগের সোরোওয়ার জাহান মন্ডল, কম্পিউটার (আইসিটি) ট্রেনিং প্রাপ্ত কনা বেগম, হিন্দু ধর্ম বিভাগে শ্যামল চন্দ্র বর্মন, শরীর চর্চা বিভাগ শাহজাম্মান আলী, শরীর চর্চা শিক্ষক, মেরিনা নুরে-ইয়াসমিন। বর্তমান উল্লেখ্য ৭জন শিক্ষক এমপি ভুক্ত হওয়ার পর থেকেই বেতন থেকে বঞ্চিত।

এদের মধ্যে সমাজ বিজ্ঞান ইংরেজি বিভাগের মোজাফফর হোসেন অভিযোগ করে বলেন, বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা থেকেই সহকারী শিক্ষক হিসেবে শিক্ষকতা করছি। ২০ বছরের অধিক সময় পার করেছি। ২০১৯ সালে এমপি ভুক্ত হলেও প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলাম মর্তাজার কারনে আমরা কয়েক জন শিক্ষক ভাতা তুলতে পারছি না। তিনি স্কুল প্রদেয় বেতন ভাতাদি স্থগিত করে রেখেছেন। বেতনের কথা বলতে গেলেই তিনি অসৌজন্যমূলক আচরণসহ বিভিন্ন ভাবে হয়রানী করছেন। মহামারী করোনা ভাইরাস কালেও তারা বিদ্যালয় হতে কোন ভাতাদি পায় নাই। বর্তমানে তারা স্ত্রী সন্তান নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন বলে জানান তিনি।


মঙ্গলবার দুপুর ১টায় বিদ্যালয়ের সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলাম মর্তাজা তার কক্ষে শুধু মাত্র ১টি টেবিল আর বেশ কয়েকটি চেয়ার নিয়ে বসে আছেন। তার টেবিলে বিদ্যালয়ের কোন ফাইলপত্র বা জরুরী প্রয়োজনে কাগজ কলম নেই। দামি কাগজ পত্র সংরক্ষণ করার মত কোন আলমারি বা আসবাবপত্র নেই। বিদ্যুৎ বিছিন্ন জানালার কোন পাল্লা নেই। বৃষ্টির পানী পড়ে মেঝে অনেকটাই জরাজীর্ণ।

সাত শিক্ষক বেতন পাচ্ছে না কেন জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলাম (মর্তাজা) আলোকিত বগুড়া’র প্রতিবেদককে বলেন, ২ বছর হলো বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি নিয়ে ঝামেলা চলছিল। সে কারণে তাদের বেতন স্থগিত হয়েছিল নতুন ভাবে ফাইল পাঠিয়েছি দ্রুত তারা বেতন পাবেন।


বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতনের সুযোগ সুবিধা না করে ম্যানেজিং কমিটি না থাকায় প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলাম (মর্তাজা) গত ৩১ জুলাই, ১৪ আগষ্ট ও ১৭ আগষ্ট দৈনিক গণমুক্তি পত্রিকায় ৪ পদের জন্য একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেন। সেখানে একজন অফিস সহকারী, একজন পরিছন্নতা-কর্মী, একজন নিরাপত্তা কর্মী ও একজন নৈশ্য প্রহরী পদের জন্য নিয়োগ ঘোষণা করেন। পরে তার মনগড়া ব্যক্তিদের কাছ থেকে মোটা অর্থ হাতিয়ে নেওয়ারও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
যাদের মধ্যে চাকরি দেওয়ার নামে উজির আলী নামের ১ ব্যক্তির কাছ থেকে বিদ্যালয়ের জন্য ৮ শতক জমি ৫ লাখ টাকা এবং জয়নালের পুত্র আব্দল্লাহ আল মামুনকে নিরাপত্তাকর্মী হিসাবে ১৪ লাখ টাকা নিলেও পরে তাদের চাকরি না দিয়ে অন্যদের দেওয়া হয়।

অতঃপর প্রতারনার শিকার হয়ে উজির আলী আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছেন। বর্তমান মামলাটি বিচারাধীন রয়েছে।

বিদ্যালয়ের ভুক্তভোগী শিক্ষক ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, বিদ্যালয়ে সকল শ্রেনী মিলে ৭৪৭ জন শিক্ষার্থী কাগজ কলমে থাকলে প্রতিদিন ৪০/৪৫ জন শিক্ষার্থীরা উপস্থিত থাকেন। বিদ্যালয়ে ছাত্র/ছাত্রীদের আসার জন্য প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলাম (মর্তাজা) কখনো শিক্ষার্থীদের উদ্ধুদ্ধ করেন না। কোন দিন অভিভাবক সমাবেশেরও আয়োজন করেন নি। যে কারনে দিন দিন ছাত্র/ছাত্রীদের সংখ্যা কমে সবাই বিদ্যালয় থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন।

এবিষয়ে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি শাহীনুর ইসলাম আলোকিত বগুড়া’কে বলেন, আমি নবগঠিত ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হয়ে জানতে পেরেছি প্রধান শিক্ষকের সীমাহীন দুর্নীতি ও অনিয়ম৷ এ বিষয়ে অনেক অভিযোগও পেয়েছি। প্রধান শিক্ষক যা করেছে সেগুলো আইনী প্রক্রিয়ায় ভুক্তভোগীরা ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। অসহায় শিক্ষকরা যাতে দ্রুত বেতন পায় সে জন্য দাপ্তরিকভাবে কাজ চলছে৷ আমি সভাপতি হয়েছি বিদ্যালয়ের শিক্ষার মানোন্নয়ন করে শিক্ষার্থীদের শিক্ষার বাগান হিসেবে গড়ে তুলবো ইনশাআল্লাহ।

ভুক্তভোগী শিক্ষকেরা আক্ষেপ করে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে পরিবার নিয়ে খেয়ে আছি না না খেয়ে আছি প্রধান শিক্ষক কোন খোঁজ খবর নেয়নি। বর্তমানে প্রধান শিক্ষকের অনিয়ম ও সেচ্ছাচারিতা ও দুর্নীতির কারনে প্রতিষ্ঠানটির সুনাম ও শিক্ষার পরিবেশ বিনষ্ট হচ্ছে। এঅবস্থায় প্রধান শিক্ষকের অপসারণ করে বিদ্যালয়ের সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনার দাবী জানান শিক্ষকরা।

এ বিষয়ে শিবগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তহমিনা আকতার আলোকিত বগুড়া’র প্রতিবেদককে বলেন, আমি নতুন যোগদান করেছি বিষয়টি দেখতে হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোন অনিয়ম হলে অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থান গ্রহণ করা হবে।

Facebook Comments Box

Posted ১২:০৯ পূর্বাহ্ণ | বুধবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৩

Alokito Bogura || Online Newspaper |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০  

উপদেষ্টা:
শহিদুল ইসলাম সাগর
চেয়ারম্যান, বিটিইএ

প্রতিষ্ঠাতা ও প্রকাশক:
এম.টি.আই স্বপন মাহমুদ
বার্তা সম্পাদক: এম.এ রাশেদ
সহ-বার্তা সম্পাদক: মোঃ সাজু মিয়া

বার্তা, ফিচার ও বিজ্ঞাপন যোগাযোগ:
+৮৮০ ৯৬ ৯৬ ৯১ ১৮ ৪৫
হোয়াটসঅ্যাপ ➤০১৭৫০ ৯১১ ৮৪৫
ইমেইল: alokitobogura@gmail.com

বাংলাদেশ অনলাইন নিউজ পোর্টাল এসোসিয়েশন কর্তৃক নিবন্ধিত।
তথ্য মন্ত্রণালয়ের বিধি মোতাবেক নিবন্ধনের জন্য আবেদিত।
error: Content is protected !!