বগুড়া সারিয়াকান্দি পৌর ও সদর এলাকায় ৩ কোটি টাকা ব্যায়ে একটি সড়কের সংস্কার কাজে নিম্নমানের ইটের খোঁয়া ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। সড়কের মেইনটেনিং কাজের জন্য নির্মিত খুঁটি নির্মানেও রয়েছে অনিয়মের অভিযোগ। এ নিয়ে ঠিকাদারের লোকজনের সাথে চলছে এলাকাবাসীর দফায় দফায় সংঘর্ষ। টনক নরছে না ঠিকাদারের।
উপজেলার পৌর এলাকার কৈয়েরপাড়া গ্রাম থেকে সদর ইউনিয়নের দিঘলকান্দি গ্রাম পর্যন্ত ৮৪০ মিটার দৈর্ঘ্যের সংযোগ সড়কের সংস্কারকাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। ডিজাস্টার রিস্ক ম্যানেজমেন্ট এনহেন্সমেন্ট প্রজেক্ট প্রকল্পের আওতায় এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের বাস্তবায়নে সড়টি নির্মানকাজে অর্থায়ন করেছে বাংলাদেশ গভঃ ও জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)। সড়কটি সংস্কারের প্রাক্কলিত মূল্য ধরা হয়েছে ৩ কোটি ৪ লাখ ৬৬ হাজার ৩৫ টাকা এবং চুক্তিমূল্য ধরা হয়েছে ২ কোটি ৫৭ লাখ ১৯ হাজার ২১৬ টাকা। নির্মানকাজের সময় ধরা হয়েছিল ২০২২ সাল পর্যন্ত। যা এখন মেয়াদোত্তীর্ণ কাজ। কাজটির ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ডিটিসি অ্যান্ড এসআইসিপিএল ( জেভি) কোম্পানি ।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, সড়কটি সংস্কার কাজের জন্য পৌর এলাকার পল্লী বিদ্যুৎ পাওয়ার স্টেশনের সামনে একটি ঘরে চুপিসারে চলছে খুঁটি তৈরির কাজ। সেখানে ব্যবহার করা হচ্ছে নিম্নমানের ইটের খোঁয়া। ভাল মানের ইটের খোঁয়ার পরিবর্তে সেখানে ফেলা হয়েছে কোন পরিত্যক্ত সড়ক থেকে তুলে নিয়ে আসা ইটের ডাস্ট। যার মান নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে তুমুল সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। খুঁটি নির্মাণের রড, সিমেন্ট এবং বালু ব্যবহারেও রয়েছে অনিয়মের অভিযোগ। প্রতিটি খুঁটিতে এস্টিমেটে উল্লেখকৃত রডের সংখ্যার কম রড ব্যবহার করা হয়েছে। এছাড়া খুঁটি তৈরির সিমেন্ট বালুর অনুপাতও সঠিক হয়নি। ঠিকাদারের লোকজন এ ডাস্ট ইটের খোঁয়া দিয়েই সড়কের আর সিসি ঢালাইকাজের চেষ্টা করেন। এ নিয়ে গত বৃহস্পতিবার বিকালে ঠিকাদারের লোকজনের সাথে এলাকাবাসীর ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
এ বিষয়ে সদর ইউপির সদস্য তুহিন মিয়া বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করে ঠিকাদার একটি জোড়াতালি সড়ক সংস্কারকাজ সম্পন্ন করতে চাচ্ছেন। অতি দ্রুত প্রশাসনের কঠোর তদারকি এলাকাবাসীর পক্ষে দাবি জানাচ্ছি।
উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী তরফদার বলেন, সড়কটির নির্মানকাজে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করা হচ্ছে এবং নানা ধরনের অনিয়ম করা হচ্ছে মর্মে একাধিক এলাকাবাসী আমাকে অভিযোগ করেছেন। এ বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে প্রশাসনকে জানানো হবে।
এ বিষয়ে কথা হলে সারিয়াকান্দি পৌরসভার মেয়র মতিউর রহমান মতি বলেন, নিম্নমানের খোয়া অপসারনের জন্য ঠিকাদারকে নির্দেশ দিয়েছি।
এ বিষয়ে মুঠোফোনে কথা হলে ডিটিসি অ্যান্ড এসআইসিপিএল (জেভি) কোম্পানির ফাইজুর রহমান বলেন, এলাকাবাসীর অভিযোগ মিথ্যা । আমি সেখানে ভালমানের খোয়া ব্যবহার করছি।
সারিয়াকান্দি উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী অপসারণ করতে আমি সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে নির্দেশ দিয়েছি। কথা না শুনলে প্রয়োজনে তার কাজ বন্ধ করে দেয়া হবে অথবা তার কাজের বিল আটকে দেয়া হবে।
Posted ৪:২৯ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ৩১ মার্চ ২০২৩
Alokito Bogura || Online Newspaper | MTi SHOPON MAHMUD