বগুড়া সোনাতলায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান কর্তৃক স্বাক্ষর জালিয়াতি ও শিক্ষার্থীদের পাঠদানে অমনোযোগীতার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার মূলবাড়ি কোয়ালীপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রশান্ত কুমার বিদ্যালয়টির ম্যানেজিং কমিটিকে না জানিয়ে নিজের ইচ্ছা মত সরকারী অর্থ খরচের আলোচনা সভা করে বিদ্যালয়ের রেজুলেশনে, কমিটির অনুপস্থিতিতে ডান-বাম করে স্বাক্ষর প্রদান করে।
অভিযোগে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও সদস্যরা উল্লেখ করেন, প্রধান শিক্ষক প্রশান্ত কুমার বরাবরই বৈরীমূলক আচারন করে থাকে তাদের সাথে। বিদ্যালয়ের সার্বিক উন্নয়নে তাদের সহোযোগীতা গ্রহণ না করে তার পাঠদানে অমনযোগীতা অব্যহত রাখেন এবং সকল ক্ষেত্রে ম্যানেজিং কমিটিকে পাশ কাটিয়ে চলে যান। তারা আরও উল্লেখ করেন, সরকারী অর্থ খরচের আলোচনা সভায় গত ০২ মার্চ ২০২২ইং তারিখে রেজুলেশনে ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যদের স্বাক্ষর জালিয়াতি করেন তিনি। অভিযোগে সংযুক্তি সভার কার্য বিবরনী রেজুলেশনে দেখা যায়, উপস্থিত সদস্যগনের তালিকায় নুরনবী সাকিদার ও মোকছেদ আলী নামের সদস্যর অনুপস্থিত থাকা স্বাক্ষর জাল করেছে।
এ বিষয়ে ম্যানেজিং কমিটির সদস্য নুরনবী জানান, আমি ওই মিটিংয়ে ছিলাম না। প্রধান শিক্ষকের এমন অনিয়ম এবং বৈরীমূলক আচারনের জন্য আমি সেই মিটিংয়ে যাইনি। যখন জানতে পারলাম আমাদের ছাড়াই মিটিং করা হয়েছে- তখন প্রধান শিক্ষকে বললে তিনি বলেন, আপনাদের আর স্বাক্ষর বা থাকা লাগবে না। আপনাদের ছাড়াই এটিও কে সাথে নিয়ে কাজ হবে। আপনাদের প্রয়োজন নেই।
অপরদিকে একই অভিযোগ অপর ম্যানেজিং কমিটির সদস্য মোকছেদ আলীর। তিনি জানান, বিদ্যালয়ের উন্নয়ন কাজের ১লক্ষ ৫০ হাজার টাকা গড়মিল করার জন্য তিনি আমাদের ছাড়াই এ সকল কাজ করছে।
বিষয়টি নিয়ে সরেজমিনে গিয়ে প্রধান শিক্ষক প্রশান্ত কুমার এর কাছে স্বাক্ষর জালিয়াতির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা মিটিং কল করি। সেই মিটিংয়ে অনেকেই এসেছেন, কয়েক জন আসেনি। মিটিং শেষে আমি আমার দপ্তরী কাম নৈশপ্রহরীকে দিয়ে বাড়িতে রেজুলেশনটি স্বাক্ষর করার জন্য পাঠাই। এখন সে কাকে দিয়ে করিয়েছে তা আমার জানা নেই।
এ দিকে বিদ্যালয়টির দপ্তরী কাম নৈশপ্রহরী বিপ্লব চন্দ্র দাসের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি তাদের বাড়িতে গিয়েছি কিন্তু তাদের স্বাক্ষর পাই নি। ওই রকমই খালি জায়গাই জমা দিছি প্রধান শিক্ষকের কাছে।
এদিকে বিদ্যালয়টির এক পিতা অভিভাবক সদস্য সাংবাদিকদের বলেন, এই প্রধান শিক্ষক জোড়পূর্বক উমুক শিক্ষকের কাছে কোচিং, প্রাইভেট পড়ার কথা বলে। তার কথা না শুনলে খারাপ কিছু হওয়ার হুমকি দিয়ে থাকেন এই শিক্ষক। আরেক অভিভাক সদস্য জানান, আমি আমার ছেলের কাছে মাঝে মাঝে শুনি ঠিক মত ক্লাস নেন না শিক্ষকরা। এক কথায় পাঠদানে অমনোযোগী।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার রবিন্দ্রনাথ সাহা জানান, মুলবাড়ী কোয়ালীপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের অপকর্মের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এদিকে প্রধান শিক্ষকের এহেন কর্মকান্ডে বিরক্ত ম্যানেজিং কমিটি ও অভিভাবক সদস্যরা। বিদ্যালয়ের উন্নয়ন এবং মানসম্মত পাঠদানের জন্য দ্রুত সময়ের মধ্য এই শিক্ষকের অপসরন চায় স্থানীয় এলাকাবাসী।
উল্লেখ্য, গেল ১৫ই মার্চ ২০১৭ইং তারিখে যোগদান করে প্রধান শিক্ষক প্রশান্ত কুমার। যোগদানের পর থেকেই নিজ ইচ্ছামত কাজ করে। তার এই অপকর্ম ও অনিয়ম তুলে ধরে ৩২০জন ম্যানেজিং কমিটি ও অভিভাবক সদস্যদের স্বাক্ষরিত একটি অভিযোগ পত্র জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার অনুলিপিস্বরুপ উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা শিক্ষা অফিসারের নিকট অভিযোগ করেন।
আ/ব/মিনহাজুল বারী
Posted ১০:৩৬ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২৩ জুন ২০২২
Alokito Bogura। Online Newspaper | MTi SHOPON MAHMUD