ছবি- (আলোকিত বগুড়া)
বগুড়ার সোনাতলার ভেলুপাড়ায় স্ত্রীর কবরের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের সাবেক মহাপরিচালক, একুশে ও স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত প্রত্নতাত্বিক ও গবেষক প্রফেসর ড. এনামুল হক। আজ শুক্রবার সকালে বগুড়ার টিএমএসএস এর ড. এনামুল হক আর্ট এন্ড কালচারাল একাডেমিতে ২য় জানাযা ও বাদ জুম্মা ভেলুরপাড়া ড. এনামুল হক ডিগ্রী কলেজ মাঠে ৩য় জানাযা শেষে গ্রামের বাড়িতে মরহুমের দাফন সম্পন্ন হয়। এর আগে বৃহস্পতিবার ঢাকায় জাতীয় যাদুঘরের সামনে প্রথম জানাযা অনুষ্ঠিত হয়।
আজ সকালে বগুড়ার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সর্বস্তরের মানুষ ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করে। এ সময় জেলা প্রশাসক মোঃ জিয়াউল হক উপস্থিত থেকে ড. এনামুল হকের মরদেহের পাশে পুষ্পস্তবক অপর্ন করেন।
এ সময় জেলা প্রশাসক ছাড়াও ড. এনামুল হকের মরদেহে শ্রদ্ধা নিবেদন করে বগুড়া জেলা পুলিশ, জেলা আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটসহ বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতা কর্মীরা।
মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর। এনামুল হক বগুড়ার সোনাতলার ভেলুরপাড়া এলাকার বাসিন্দা। তবে তিনি দীর্ঘদিন ধরে রাজধানীতে বসবাস করতেন। ব্যক্তিগত জীবনে তার এক মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছেন। তারা বিদেশে বসবাস করেন। প্রায় সাত বছর আগে তার স্ত্রী মারা যান। মেয়ে তৃণার দেশে আসা পর্যন্ত এনামুল হকের মরদেহ বারডেম হাসপাতালের হিমঘরে রাখা ছিল।
১৯৩৭ সালের ১ মার্চ বগুড়ার ভেলুরপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন প্রফেসর ডক্টর এনামুল হক। বগুড়া জিলা স্কুল থেকে মাধ্যমিক সম্পন্ন করেন। পরে উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাস বিভাগে স্নাতক ও ইতিহাস-প্রত্নতত্ত্বে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জন করেন। পরবর্তীতে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দক্ষিণ এশিয়ার শিল্প নিয়ে গবেষণা করে পিএইচডি ডিগ্রী লাভ করেন।
১৯৬২ সালে এনামুল হক তৎকালীন ঢাকা জাদুঘরে যোগদান করে। পরবর্তীতে ১৯৬৫ সালে পদোন্নতি পেয়ে অধ্যক্ষ, ১৯৬৯ সালে পরিচালক হিসেবে কাজ করেন। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ঢাকা জাদুঘরকে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরে রুপান্তর করা হয় এবং এর প্রতিষ্ঠাকালীন মহাপরিচালক হিসেবে এনামুল হক যোগদান করে। মহাপরিচালক হিসেবে তিনি ১৯৮৩ সাল থেকে ১৯৯১সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। একই সাথে তাকে ১৯৯০ সালে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব হিসেবে নিয়োগ প্রদান করা হয়।
২০১৪ সালে গবেষণার ক্ষেত্রে অবদানের স্বীকৃতিস্বরুপ তিনি একুশে পদক লাভ করেন। সংস্কৃতিতে অনন্য সাধারণ অবদানের জন্য ২০১৭ সালে তাকে সংস্কৃতিতে স্বাধীনতা পুরস্কার প্রদান করা হয়। সর্বশেষ প্রত্নতত্ত্বে বিশেষ অবদানের জন্য ভারত সরকার তাকে ২০২০সালে পদ্মশ্রী পদকে ভূষিত করে।
এম.টি.আই স্বপন মাহমুদ/আ/ব
Posted ৯:৩৪ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ১৫ জুলাই ২০২২
Alokito Bogura। আলোকিত বগুড়া | MTi SHOPON MAHMUD