বিশাল যমুনা নদী এবং তাদের শাখা নদী দ্বারা বেষ্টিত দুর্গম সোনাতলা উপজেলার পূর্ব তেকানী ও সারিয়াকান্দি উপজেলার আউচারপাড়া চর। শিক্ষা নিয়ে বেড়ে উঠছে এখানকার শিক্ষার্থীরা। এখানে তেমন নেই কোনো ভালো মানের অবকাঠামো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। চরমভাবে পিছিয়ে থাকা এই চরে আলোকবর্তিকা হয়ে শিক্ষার আলো জ্বালাবার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন শাহজাহান বেপারী নামের এক ব্যাক্তি।
জানা গেছে, বগুড়া জেলার সারিয়াকান্দি উপজেলার চালুয়াবাড়ী ইউনিয়নের আউচার পাড়া চরে মরহুম সাহার আলীর ছেলে আব্দুস সামাদ বেপারী একান্ত প্রচেষ্টায় বাবার জমিতে ২০০০ সালে গড়ে তোলে একটি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়। চরাঞ্চলের ছেলে মেয়েরা বিদ্যালয়টি পেয়ে আনন্দে নিজ এলাকায় লেখা পড়া শুরু করে। দুবছর না যেতেই যমুনার কবলে বিলীন হয়ে যায় বিদ্যায়টি। দুর্চিন্তায় পরে সামাদ মিয়া কি হবে এলাকার ছেলে -মেয়েদের লেখা পড়া, কি হবে ভবিষ্যৎ। ২০০৪ সালে আবারও নিজেদের জায়গার উপর গরে তোলে সেই বিলিন হওয়া বিদ্যালয়টি। তখন থেকেই সেই টিন সেড বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী সংগ্রহ করতে শুরু করতে লাগলো তারই ছোট ভাই শাহজাহান মাস্টার। দিন রাত পরিশ্রম করে নিজে নৌকা চালিয়ে বাড়ী বাড়ী ঘুরে ঘুরে শিক্ষার্থী সংগ্রহ করতে শুরু করে। ভালই চলছিল বিদ্যালয়ের পড়াশুনা। অনেক প্রচেষ্টার ফলে ২০১০ সালে প্রয়াত বগুড়া-১ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুল মান্নান বিদ্যালয়টি জাতীয়করন করেন। লেখাপড়ার মান উন্নয়ন হতে শুরু করে। কিন্তু ২০২০সালে আবারও প্রতিষ্ঠানটি যমুনা নদী গর্ভে বীলিন হয়ে যায়। পরবর্তীতে সোনাতলা উপজেলার সীমান্তবর্তী পূর্ব তেকানী চরে শাহজাহান মাষ্টারের বাপ দাদার ৯১ শতাংশ জমির উপর পুনরায় বিদ্যায়টি গড়ে তোলে। তবে বিদ্যালয়ের চারপাশে যমুনার শাখা নদী থাকায় শিক্ষার্থীদের স্কুলে যাওয়ার একমাত্র ভরসা নৌকা। বিদ্যায়টি সোনাতলা উপজেলার মধ্যে হলেও কার্যক্রম সারিয়াকান্দি উপজেলায়। তবে শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের সুবিধার্তে পরীক্ষা কেন্দ্রটি সোনাতলায় আনা হয়েছে। এবছরে ওই প্রতিষ্ঠানে বিজ্ঞান ও মানবিক বিভাগ থেকে মোট ৮৭ জন শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষা দেন। এতের মধ্যে ৭৭জন পরীক্ষায় পাশ করেন সেখানে ২৪জন শিক্ষার্থী জিপিএ ৫ পায়। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটি টিন সেড দিয়ে করা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা বলেন সরকারীভাবে ইটের তেরী ভবন হলে ভালো হত।
৯ম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী আলোকিত বগুড়া’কে বলেন, আমাদের খুব আন্তরিক ভাবে শিক্ষরা পাঠদান করান কিন্তু সমস্যা হলো চরের ধুলা বালি আর গরমের দিনে গরমে পাঠদান ও খেলাখুলা করা আমাদের জন্য খুবই কষ্ট কর। আমাদের অবকাঠামো পাকা হলে আরও ভালো হতো।
ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষক শাহজাহান আলী বেপারী বলেন, বিদ্যালয়ের চার পাশে যমুনার শাখা নদী যাহা বন্যা এলে শিক্ষার্থীদের স্কুলে আশার একমাত্র যাতাযাতের ভরসা নৌকা। তবে স্কুলের পশ্চিম পাশে যমুনার খালটি যদি সরকারী ভাবে ভরাট হতো যাতায়াতের জন্য খুবই ভাল হতো। আর বিদ্যায়ের অবকাঠামো ভালো হলে শিক্ষার্থীদের লেখা পড়ার মান উন্নয়ন আরও ভালো হতো।
Posted ৫:২৯ অপরাহ্ণ | সোমবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২২
Alokito Bogura || আলোকিত বগুড়া | MTi SHOPON MAHMUD