গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ পৌরসভায় ‘আবদুল লতিফ হক্কানী ব্রীজ রোড, গাইবান্ধা’ নামে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের জামানতের ১১ লাখ টাকা রাজস্ব খাতে স্থানান্তর করে আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ আইনী ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিলেও দীর্ঘদিনেও কোন ব্যবস্থা নেননি পৌরসভাটির মেয়র।
সুন্দরগঞ্জ পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে, গাইবান্ধায় নর্দার্ন বাংলাদেশ ইন্টিগ্রেটেড ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ২০১৯ সালে সুন্দরগঞ্জ পৌরসভার প্রায় আড়াই কোটি টাকা ব্যয়ে একটি ড্রেনের কাজ সমাপ্ত করে ‘আবদুল লতিফ হক্কানী ব্রীজ রোড, গাইবান্ধা’ নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। কাজটি পৌরসভাকে বুঝিয়ে দিয়ে ২০২০ সালের ১৫ নভেম্বর চূড়ান্ত বিল গ্রহণ করে প্রতিষ্ঠানটি। নিয়ম অনুযায়ী কাজ সমাপ্তের এক বছর পর ২০২০ সালের ৩০ ডিসেম্বর জামানতের ১১ লাখ ২১ হাজার ৮২৯ টাকা ফেরৎ প্রদানের জন্য বর্তমান মেয়রের কাছে আবেদন করা হয়। কিন্তু সুন্দরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র জামানতের টাকা ফেরত দিতে ব্যর্থ হন।
পরে বিষয়টি চলতি বছরের ২৫ জানুয়ারি প্রকল্প পরিচালককে অবগত করা হয়। ঠিকাদারের টাকা ফেরৎ না পাওয়ায় কারণ দর্শানের জন্য চলতি বছরের ২ ফেব্রæয়ারি সুন্দরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র বরাবরে একটি চিঠি প্রদান করেন প্রকল্প পরিচালক। তার জবাবে মেয়র উল্লেখ করেন, আমার দায়িত্ব গ্রহনের সময় উক্ত জামানতের একাউন্টে কোন অর্থ পাওয়া যায়নি। সংশ্লিষ্ট শাখায় উক্ত বিষয়ে তথ্য চাওয়া হলে দেখা যায়, উক্ত জামানতের অর্থ রাজস্ব একাউন্টে স্থানান্তর করে প্রকল্প দেখিয়ে ব্যয় করা হয়েছে।
প্রকল্প পরিচালক আবারও চলতি বছরের ১৫ জুন মেয়রকে জামানতের টাকা প্রদানের বিষয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগে চিঠি প্রদান করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন। কিন্তু দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হলেও মেয়র কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেননি। এ অবস্থায় জামানতের টাকা পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্বত্ত¡াধিকারী আবদুল লতিফ হক্কানী বলেন, তিন যুগেরও অধিক সময় ধরে আমি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সুনামের সাথে ঠিকাদারি করে আসছি। ইতিপূর্বে কোন প্রতিষ্ঠানে এমন ধরনের ঘটনা ঘটেনি। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের জামানতের অর্থ কিভাবে পৌরসভার মেয়র অন্যখাতে ব্যবহার করল এটা আমি বুঝে উঠতে পারলাম না। আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানাচ্ছি অতিসত্ত¡র আমার জামানতের টাকা ফিরিয়ে দেওয়া হোক এবং এই দুর্নীতির সাথে যেই থাক তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
এ ব্যাপারে সুন্দরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আবদুর রশীদ রেজা সরকার বলেন, জামানতের টাকার ব্যাপারে আমার কিছুই করার নেই। আমার আইনী ব্যবস্থা নেওয়ার এখতিয়ার নেই। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে।
গাইবান্ধা স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক (ডিডিএলজি) মো. রবিউল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমি তদন্ত করছি। পুরোপুরি তদন্ত শেষ হলে আনুষ্ঠানিকভাবে জানাতে পারব। তবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের জামানতের অর্থ অন্য কোন খাতে ব্যয় করাটা গুরুতর অপরাধ বলে জানান তিনি।
Posted ২:১৯ অপরাহ্ণ | শনিবার, ২৩ জুলাই ২০২২
Alokito Bogura || আলোকিত বগুড়া | MTi SHOPON MAHMUD