সারিয়াকান্দির যমুনা নদীর চরাঞ্চলে ভেড়া পালনের উজ্জল সম্ভাবনা থাকায় পরিবারিক ভাবে ভেড়া পালনের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ ভেড়া পালন করে একদিকে যেমন দরিদ্র অসহায় পরিবারের অর্থনীতে চাঙ্গাভাব তৈরী করছেন অন্যদিকে অনেক বেকার যুবক লাখপতি হওয়ার স্বপ্নে বাণিজ্যিক ভাবে ভেড়া পালন করছেন।
উপজেলা প্রাণী সম্পদ অফিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সারিয়াকান্দি উপজেলায় বিস্তীর্ণ চরাভূমিতে গরু, ছাগল, ভেড়া, মহিষ পালনের উজ্জল সম্ভাবনা রয়েছে। এসব পালন করে প্রাণী সম্পদ ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারে। চরে এসব প্রাণী লালন পালন করে দেশের অর্থনীতিতে চাঙ্গাভাব তৈরী করা ছাড়াও বহিরবিশ্বে এসব পশুর মাংস রপ্তানি করে প্রচুর পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা সম্ভব। তবে জীবন জীবিকার তাগিতে এ অঞ্চলের অনেকেই ওইস প্রাণী লালন পালন করে থাকেন। এক্ষেত্রে পরিবারের অল্প প্ররিশ্রমি ও দরিদ্র শ্রেণীর লোকেরা গরু, ছাগল, ভেড়া পালন করে পরিবারে অর্থনীতির চাকা চালু রাখেন। পরিবারের দূঃসময়ে পালন করা এসব প্রাণী বিক্রি করে সংসারের চাহিদা মিটিয়ে থাকেন।
তবে যমুনা নদীর চরাঞ্চলের অনেক বেকার যুবক খামার করে ছাগল, গরু, মহিষ পালন ছাড়াও ভেড়া বানিজ্যিক ভাবে লালন পালন শুরু করে দিয়েছেন। সারিয়াকান্দি চরাঞ্চলে ৫৪৫ হেক্টর জমির চারণ ভূমি রয়েছে। এসব চরে চারণ ভূমিতে প্রতিদিন কমপক্ষে প্রায় ২৫হাজার একমাত্র ভেড়া চড়ে থাকে বলে উপজেলা প্রাণি সম্পদ অফিস জানায়।
হাটশেরপুর ইউনিয়নের দিঘাপাড়া চরের সলেমান প্রাং বলেন, আমার ০৩টি গরু, ৪টি ছাগল ও ৬টি ভেড়া রয়েছে। এসব লালন পালনের জন্য সরকারী ভাবে কোন সহযোগিতা নেয়ার প্রয়োজন হয়নি। পরিবারের সদস্যদের যেকোন ধরনের বিপদ-আপদের সময় আমি এসব প্রাণি বিক্রি করে টাকার সমস্যা সমাধান করে থাকি। এছাড়াও এসব প্রাণি লালন পালন করতে আমাকে খুব ভাল লাগে।
কাজলা ইউনিয়নের ধরবন্দ চরের বেলাল হোসেন বলেন, আমি ৩বছর ধরে কেবলমাত্র ভেড়া পালন করে আসছি। বিশাল চরে আমার প্রায় ১২৫টি ভেড়ার বাতান চারন ভূমিতে চড়ে থাকে। বন্যার সময় এসব ভেড়া বিক্রি করে আমার লাখপতি হওয়ায় স্বপ্ন রয়েছে।
এছাড়াও বোহাইল ইউনিয়নের কমলপুর চরের ডন, হিলটু, সাব্বির, জাহ্ঙ্গাীর ও তোজাম ১১ বিঘা জমিতে বাণিজ্যিক ভেড়া পালনের উদ্যেগ গ্রহণ করেছেন। হিলটু বলেন, আমরা ৩৩১টি ভেড়া নিয়ে ১১ বিঘা জমিতে ভেড়া পালন শুরু করেছিলাম। করোনা ও বন্যার কারণে আমরা প্রথম বছর তেমন একটা ফল পাইনি। তবে এবছর ভাল ফল পাবো বলে আশা করছি।
উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা নূরে আলম সিদ্দিকী বলেন, এ এলাকায় বিশাল চারণ ভূমি রয়েছে। এসব চারণ ভূমিতে অনেকেই গবাদি পশু পাখি লালন পালন করেন। আমাদের লোকবল কম থাকার কারণে উজ্জল সম্ভাবনাকে কাজে লাগতে পারছিনা। উজ্জল সম্ভাবনা কাজে লাগাতে পারলে স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা সম্ভব। তবে বাড়ি বাড়ি গবাদি পশু পাখি পালন করে এ এলাকার মানুষেরা অর্থনীতিতে চাঙ্গাভাব আনায়ন করছেন। তারপরও আমরা এসব গবাদি পশু পালনকারীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে সুপরার্মশ দিয়ে আসছি।
Posted ৯:৩৪ অপরাহ্ণ | বুধবার, ১০ মার্চ ২০২১
Alokito Bogura। সত্য প্রকাশই আমাদের অঙ্গীকার | Trisha Mahmud