বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে সস্তা দামে চাল পেয়েও মুখে হাসি নেই হত দরিদ্রদের। দরিদ্রদের চোখে মুখে কেবলই হতাশা আর দুর্ভোগের ছাপ। এমন চিত্র ফুটে ওঠেছে বোহাইল ইউনিয়নের বিভিন্ন চর গ্রাম থেকে আসা হতদরিদ্রদের মাঝে।
জানা গেছে, এ বোহাইল ইউনিয়নের বিভিন্ন চর গ্রাম থেকে এবার সস্তা দামে চাল পাওয়ার জন্য ইউনিয়ন পরিষদ থেকে পেয়েছেন হতদরিদ্র চাল ক্রয়ের কার্ড। কার্ড দেখালেই হতদরিদ্ররা পাচ্ছেন মাসে ৩০ কেজি চাল। চাল দাম দিতে হবে কেজি প্রতি ১৫ টাকা। ডিসেম্বর মাস থেকে শুরু হয়েছে, এই দামে চাল কেনা-বেচার কার্যক্রম। এজন্য বোহাইল ইউনিয়ন পরিষদের আওতায় নিয়োগ পেয়েছেন ২জন ডিলার। তাদের একজন হলেন একই ইউনিয়নের শংকরপুর চরে আব্দুল মান্নান ও আরেক জন হলেন, আদবাড়িয়া চরের রাকিবুল ইসলাম আকিল। এদের মধ্যে আব্দুুল মান্নান নামের ডিলার চাল দিচ্ছিলেন পাশ্ববর্তী কামালপুর ইউনিয়নের রৌহদহ গ্রামে ইউপি সদস্য শাহজাহান আলী সাজু মেম্বার এর বাড়ি থেকে। সোমবার দুপুর থেকে শুরু হয়ে যায় চাল বিতরণ কার্যক্রম।
এখানে কম মুল্যের চাল কেনার জন্য শংকরপুর চর থেকে আসা হতদরিদ্র নারী ময়না বেগম (৩০)। ময়না বেগম বলেন, বাজারে মোটা চালের দাম কমপক্ষে কেজি প্রতি ৫০ টাকা। সেখানে আমরা এ মাস থেকে পাচ্ছি মাত্র ১৫ টাকা দামে কেজি প্রতি চাল। এতে আমাদের মন ভালো থাকার কথা। কিন্তু হাসি নেই আমাদের মুখে। আমাদের গ্রামের ১৭ জন হতদরিদ্র এ কার্ড পেয়েছেন। সবাই মিলে সকাল ৯ টায় রওনা দিয়েছি। চাল বিক্রয় কেন্দ্রে পৌছেছি দুপুর ৩টার দিকে। এই মাত্র আমরা চাল হাতে পেলাম। আবার খেয়া পারাপার সহ যাতায়াত বাবদ খরচ প্রায় ১০০টাকা। এই টাকা খরচ করা ছাড়াও দীর্ঘ প্রায় ২০ কিলো মিটার চরের বালুময় পথ পার হতে হবে। এভাবে হলেও কমপক্ষে রাতের সাড়ে ১০ টায় পৌঁছা যাবে বাড়িতে। দুপুরের দানা পানিও পড়েনি আমাদের পেটে। কি ভাবে আমাদের মুখে হাসি থাকে।
এ ব্যাপারে ডিলার আবদুল মান্নান আলোকিত বগুড়া’কে বলেন, চরের ভৌগলিক অবস্থা খুবই খারাপ। আমার ভাগে পরেছে ৩৩৯ ভোক্তার কার্ড। বোহাইল এলাকার কাডধারীদের চাল নেওয়ার কোন সুযোগ নেই। বোহাইল বাজারে চাল নিলে আমার ব্যাবসায় লাল বাতি জলবে। জমিজমা, বউয়ের গহনাগাটি বেচলেও ব্যবসা করা যাবেনা। আপনারা ভোক্তাদের দুর্ভোগের পাশাপাশি আমাদের কষ্টের কথা লিখবেন।
বোহাইল ইউপি চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান খান আলোকিত বগুড়া’কে বলেন, ডিলাররা ব্যবসাকে বড় করে দেখছেন। জনগনের কথা না ভেবে যেখান থেকে খুশি চাল বিতরন করছেন। আমি এলাকায় চাল বিতরনের জন্য অনুরোধ করছি।
উপজেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রক দেওয়ান মোহাম্মদ আতিকুর রহমান বলেন, ডিলারদের তো বেশী লাভ থাকে না। ১৩ টাকা পঞ্চাশ পয়সা কেজিতে চাল কিনে ক্যারিং, লেবার ও অন্যান্য খরচ সহ লাভের পরিমান খুব সীমিত হাতে থাকে। চরের ডিলারদের জন্য আলাদা কোন খরচ থাকে না।
Posted ৪:৫০ অপরাহ্ণ | বুধবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২২
Alokito Bogura। আলোকিত বগুড়া | MTi SHOPON MAHMUD