বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে দুর্গম চরে ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থী ধর্ষনের শিকার হয়েছে। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে স্থানীয় এক বখাটে বিভিন্ন সময়ে শিক্ষার্থীটিকে একাধিকবার ধর্ষন করেছে। এর ফলে খুদে ওই শিক্ষার্থী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পরার অভিযোগ ওঠেছে। ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে স্থানীয়রা একাধিকবার দেন-দরবার করে তার সাথে বিয়ে পরিয়ে দেওয়ায় প্রস্তুাব দেওয়া হলেও, ধর্ষক বিয়ে করতে রাজি না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত বুধবার সকালে বগুড়ার আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ঘটনা নিয়ে চর এলাকার বিভিন্ন মহলে তোলপাড় শুরু হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটিয়েছে বগুড়ার সারিয়াকান্দির কর্ণিবাড়ী ইউনিয়নের শোনপচা চরের গুচ্ছ গ্রামে মৃত: জালাল প্রামানিকের ছেলে বখাটে শাহাদত হোসেন (২১)।
স্থানীয়রা জানান, ওই শিক্ষার্থীর বিয়ের প্রলোভনে সম্পর্ক গড়ে তোলে। এরপর সুযোগ বুঝে শিক্ষার্থীকে বখাটে শাহাদত ধর্ষন করতে থাকে। সবার অগোচরে বখাটে শাহাদত বিয়ে ঠিক হয় ঠাকুরগাঁয়ের রাণীশংকল উপজেলার তার এক আত্মীয়ের সাথে। বিষয়টি ওই শিক্ষার্থী টের পেয়ে স্থানীয়দের কাছে শাহাদতের ধর্ষনের কথা প্রকাশ করে দেয়। শিক্ষার্থীটি স্থানীয়দের কাছে আরো বলে, ধর্ষনের ফলে সে বর্তমানে তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পরেছে। এরপর থেকেই এলাকায় একদিকে যেমন চাঞ্চল্যকর সৃষ্টি হয় অন্যদিকে স্থানীয় বিভিন্ন মহলে তোলপার শুরু হয়। ভুক্তভোগী পরিবারের দাবি বর্তমানে বিষয়টি ধামাচাপা দিতে শাহাদতের পরিবার নানা ধরনের অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। ফলে তারা আদালতে মামলা দায়ের করেছেন।
ওই শিক্ষার্থীর জেঠাতো বড় বোন সোনিয়া খাতুন বলেন, শাহাদত এর সাথে তার প্রেমের নামে দৈহিক সম্পর্ক করায় সে তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার বিষয়টি আমার কাছে নিশ্চিত করেছে।
অন্তঃসত্ত্বা ওই শিক্ষার্থী আলোকিত বগুড়া’কে বলেন, শাহাদত এর সাথে আমার দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক। তার মাধ্যমে আমি তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়েছি। এখন শাহাদত আমাকে বিয়ে করতে চাচ্ছে না। শাহাদত অন্য মেয়েকে বিয়ে করার জন্য বিয়েও ঠিক করেছিল। আমি সেই মেয়ের নানাকে আমাদের সম্পর্কের বিষয়টি বলে দেই। পরে ওই বিয়েটি স্থগিত হয়। এখন শাহাদত আমাকে বিয়ের নামে নানা ধরনের তালবাহানা করছে। আত্মহত্যা ছাড়া আমার কোন পথ খোলা নেই।
বাড়ীতে গিয়ে এবং মোবাইল ফোনে একাধীকবার যোগাযোগ করেও ওই শাহাদতকে পাওয়া যায়নি। তবে তার বড় ভাই শাহার আলী বলেছেন, আমার ভাই শাহাদত এরকম কোন ঘটনা ঘটায়নি। সে চরে ভাড়ায় হোন্ডা এবং জমিতে পাওয়ার টিলার চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। শাহাদতের মা সালেহা বেওয়া বলেন, আমার ছেলে এরকম ঘটনা ঘটাতে পারে না। আমি খোঁজ খবর নিয়ে যতদূর জানতে পেরেছি মেয়েটির অন্তঃসত্ত্বার ঘটনা কাল্পনিক। তাকে ফাঁসানোর জন্য এরকম একটি ঘটনা সাজানো হয়েছে।
ধর্ষনের শিকার শিক্ষার্থীর দুলাভাই শহিদুল ইসলাম আলোকিত বগুড়া’কে বলেন, শাহাদত ধর্ষণ মামলা হতে বাঁচতে আমার শালীকে বিয়ে করতে চেয়েছিল। বিয়ে করার জন্য সে নাকফুল ছাড়া আর কিছুই কিনেনি। যেহেতু শাহাদত বিয়ের নামে নানা ধরনের তালবাহানা শুরু করেছে, তাই আমি এখন আইনের আশ্রয় নিয়েছি। শাহাদত এর নামে বগুড়া নারী-শিশু নির্যাতন দমন আদালতে বুধবার সকালে মামলা দায়ের করেছি।
সংশ্লিষ্ট কর্ণিবাড়ী ইউপির চেয়ারম্যান মো: আনোয়ার হোসেন দিপন বলেন, যেহেতু বিষয়টি এখন আদালতে গিয়েছে, তাই আদালতের মাধ্যমেই এর একটা সমাধান হবে।
Posted ৬:৫৪ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ১২ আগস্ট ২০২২
Alokito Bogura। আলোকিত বগুড়া | MTi SHOPON MAHMUD