বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে বাঙ্গালী নদী খনন করতে থাকলেও খুশি হতে পারছেন না নদী পাড়ের চাষীরা। তাদের উঠতি ফসল বালি ফেলে নষ্ট করে ফেলায় চাষীদের অসন্তুষ্টির মূল কারন। এমনটি জানিয়ে বিভিন্ন মহলে অভিযোগ করেছেন ভেলাবাড়ী ইউনিয়নের ভেলাবাড়ী-জোড়গাছা গ্রামের চাষীরা।
অভিযোগে চাষীরা জানান, বাঙ্গালী নদী খনন হচ্ছে বছর খানেক হলে। কিন্তু আমাদের এলাকা জোড়গাছা-ভেলাবাড়ী মৌজায় সপ্তাহ খানেক ধরে বাঙ্গালী নদীর খনন কাজ চলছে। নদী পাড়ে চরের জমিতে পাটের বীজ বপন করেছিলাম। এরই মধ্যেই পাট গাছ ৩/৪ ফুট পরিমান লম্বা হয়েছে। খনন করতে এসে ঠিকাদারের লোকজনেরা কোন কথা মানছেন না। তারা নিজেদের ইচ্ছামত কাজ করে যাচ্ছেন। ওইসব পাটের জমিতে বালিমাটি ফেলছেন। এতে করে আমাদের ধার দেনা করে ফলানো উঠতি ফসল পাট নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ধার-দেনা করা টাকা কেমনে শোধ করবো, ভেবে কুল পাচ্ছিনা। ফসল নষ্ট করার কারন জানতে চাইলে ঠিকাদারের লোকজনেরা আমাদের হুমকি-ধামকি দিচ্ছেন। আমরা ঘটনাটি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে জানিয়েছি।
জোড়গাছা পূর্বপাড়া গ্রামের পাট চাষী খোকন মিয়া বলেন, দেখেছি নদী খনন করা হয়, নদীর মধ্যখানে মেশিন বসিয়ে খনন যন্ত্র দিয়ে খনন কাজ করে থাকেন। এখন আমরা দেখছি, তা না করে নদীর পাড়ে বেকু মেশিন দিয়ে পাড় থেকে নদী খনন করা হচ্ছে। এতে প্রকৃতপক্ষে নদী খননতো হচ্ছেই না বরং বেকু মেশিন দিয়ে বালু মাটি ফেলে আমাদের উঠতি ফসল সহ চরের উর্বর জমি নষ্ট করা হচ্ছে, অন্যদিকে নদী পাড়ের বালুমাটি বর্ষার সময় পুনরায় নদীর তলায় পরে ভরাট হবে এতে আমরা খননের কোন উপকারীতা দেখছিনা। বরং সরকারের বড় অঙ্কের টাকা পানিতে যাবে।
ভেলাবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়াম্যান শরিফুল ইসলাম শিপন বলেন, নদী খনন খুব ভালো, কিন্তু তা যদি ক্ষতির কারন হয়ে দাঁড়ায় তা কারই কাম্য নয়। এলাকার ক্ষতিগ্রস্থ চাষীদের দাবীর প্রেক্ষিতে আমি সরেজমিনে গিয়েছিলাম। ঘটনার সত্যত্য পেয়ে বেকু (এস্কেভেটর) মেশিন দিয়ে ওইভাবে নদী খনন কাজ বন্ধ রাখতে বলছি। সংশ্লিষ্ট ক্ষতিগ্রস্থ চাষীদের সাথে আলাপ-আলোচনা সাপেক্ষ্যে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার পর পুনরায় মেশিন চালু করার অনুরোধ করেছি।
নদী খননের সাথে যুক্ত ঠিকাদারের প্রতিনিধি মো: শান্ত ইসলাম বলেন, আমরা চাষীদের সাথে আলাপ-আলোচনা করেছি। কারও ক্ষতি হয়ে থাকলে আমরা তা পূরণের ব্যবস্থা করবো।
এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সারিয়াকান্দিস্থ উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী (এসডিই) আব্দুর রহমান তাসকিয়া বলেন, কৃষকদের ফসল ক্ষতি করে নদী খনন করার কথা বলা নেই। এরপরেও কেউ যদি তা করে থাকে, তা ঠিক করেনি। আমরা বিষয়টি সমাধানের জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষকে বলবো।
এ ব্যাপারে সারিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, কৃষকদের ক্ষতি করা হচ্ছে এমন অভিযোগ পেয়েছি। তবে সংশ্লিষ্ট ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দিয়ে কাজ করার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
Posted ৯:৩৬ অপরাহ্ণ | বুধবার, ০৮ জুন ২০২২
Alokito Bogura। আলোকিত বগুড়া | MTi SHOPON MAHMUD