বগুড়ার শেরপুর উপজেলার মাটি খেকোদের কাছ থেকে বিভিন্ন এলাকায় ফসলি উর্বর জমি, উচু ভিটা কিংবা ক্ষুদ্র জলাশয় কোন কিছুই বাদ পড়ছে না। মাটি কেটে বানানো হচ্ছে গভীর পুকুর। উপজেলা প্রশাসনকে ম্যানেজ করে মাটি খেকোরা আইনের তোয়াক্কা না করে দিন-রাত সমান তালে চালিয়েছে অবৈধভাবে মাটি কাটার মহোৎসব। এর ফলে একদিকে যেমন এলাকার উর্বর আবাদি জমির পরিমাণ কমছে অন্যদিকে হুমকির মুখে পড়ছে বসতবাড়ি।
সরকারী আইনকে বৃদ্ধঙ্গুলী দেখিয়ে আবাদী জমির শ্রেনী পরিবর্তন করে পুকুর খননের মহোৎসবে মেতেছে ভূমিদস্যুরা। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বিশালপুর ইউনিয়েনের জামাইল বাজার সংলগ্ন চাটাইল, উপজেলার শাহবন্দেগী ইউয়িনের বাঘমাড়া গ্রামে কায়েস ও অজয়, উচরুং এলাকায় শরিফ উদ্দিন, কুসুম্বি ইউয়িনের কেল্লা এলাকায় নজরুল ইসলাম, চন্ডেশ^র গ্রামে আক্তর হোসেন ও বাশবাড়িয়া এলাকায় আব্দুল মতিন, খামারকান্দি ইউনিযনের বোয়ারমারী গ্রামে লাভলু, খানপুর ইউনিয়নের বড়ইতলী ও তাল পুকুরিয়া এলাকায় জাহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে চলছে পুকুর খনন। এছাড়াও প্রায় অর্ধশতাধিক এলাকায় অবৈধ ভাবে পুকুর খনন করছে মাটি খেকোরা।
তারপুকুরিয়া এলাকায় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জনসাধারণ লোকজন বলেন, আবাদি জমি কেটে গভীর করা হচ্ছে। আমাদের মসজিদ ঘর যেকোনো সময় ধসে পড়তে পারে। তা ছাড়া সারা দিন রাত এস্কেভেটর ও ট্রাকটরের শব্দে ঘুমাতে পারি না।
এলাকাবাসীর আরোও অভিযোগ, দিনরাত মাটি কাটা চলে। মাটি পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত ভারী ড্রাম ট্রাক চলাচলের কারণে রাস্তা ভেঙে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ছে এতে সরকারের কোটি কোটি টাকা ক্ষতি হচ্ছে। এছাড়াও গাড়ির শব্দ ও ধুলার কারণে বাইরে বের হওয়া যায় না। ১৫ থেকে ২০ ফুট গভীর গর্ত করার ফলে আশপাশের আবাদি জমি ও বসত বাড়ি ভাঙনের হুমকিতে পড়েছে। মাটি ব্যবসায়ীরা প্রভাবশালী হওয়ায় তারা প্রকাশ্যে কিছু বলার সাহস পান না। মাঝে মাঝে পুলিশ ও কথিত সাংবাদিক এসে শুধু ছবিই তোলেন কিন্তু কোন প্রতিকার হয় না।
কথা হয় জাহিদুলের সঙ্গে তিনি জানান, মাটির ব্যবসা করি দীর্ঘদিন ধরে। নিজের ভেকু মেশিন দিয়ে ইউনিয়নের বিভিন্ন জায়গায় দীর্ঘদিন ধরে পুরকুর খনন করে আসছি।
শরিফ উদ্দিন, কায়েস, অজয়, আব্দুল মতিন জানান, সবাই কাটছে তাই আমরাও কাটছি। অবাধে পুকুর খননের কারণে এখন পর্যন্ত প্রশাসনের পক্ষ থেকে কেউ নিষেধ করনি।
অথচ সরকারি গেজেটে প্রকাশিত মাটির ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ ও হ্রাসকরণ ২০১৩ সালের ৫৯ নং আইনের ৫ ধারা অনুযায়ী কোন ব্যক্তি ইট প্রস্তুত করার উদ্দেশ্যে কৃষি জমি হতে মাটি কাটা বা সংগ্রহ করে ইটের কাঁচামাল হিসাবে ব্যবহার করতে পারবে না। যদি কোন ব্যক্তি আইনের এই ধারা লঙ্ঘন করেন তা হলে তিনি অনধিক ২ (দুই) বৎসরের কারাদন্ড বা ২ (দুই) লক্ষ টাকা অর্থদন্ড অথবা উভয় দন্ডাদেশ হইবেন।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ময়নুল ইসলাম জানান, অভিযান অব্যাহত আছে।
Posted ৮:২৯ অপরাহ্ণ | রবিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২২
Alokito Bogura || আলোকিত বগুড়া | MTi SHOPON MAHMUD