বগুড়ার শেরপুরে ব্ল্যাকমেইলের শিকার হয়ে মাদরাসাছাত্রী আদুরী খাতুন(১৪) কীটনাশক পান করে আত্মহত্যা করেছে। রবিবার (২৪ এপ্রিল) রাতে বগুড়ায় শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়। সে উপজেলার খামারকান্দি ইউনিয়নের খামারকান্দি গ্রামের আবু হানিফের মেয়ে। আদুরী স্থানীয় খামারকান্দি বালিকা দাখিল মাদরাসার নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী বলে জানায় তার পরিবার।
অভিযোগে জানা যায়, উপজেলার খামারকান্দি ইউনিয়ন ও গ্রামের বাসিন্দা এন্তাজ আলীর ছেলে আবু মুছা (২০) পেশায় একজন চা বিক্রেতা। চা বিক্রয়ের কাজ করলেও কি হবে ভিডিও এডিটিংয়ে বেশ পারদর্শী হিসেবে এলাকায় পরিচিত রয়েছে। মুছা মাল্টিমিডিয়া নামে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেসবুক) একটি আইডিও চালাচ্ছে। আর সেই আইডি ব্যবহার করে ওই মাদরাসা ছাত্রীর অশ্লীল ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ওই শিক্ষার্থীকে প্রেমের সম্পর্ক গড়তে এবং একপর্যায়ে শারীরিক সম্পর্ক গড়তে বাধ্য করে মুছা। পরে বিষয়টি উভয় পরিবারে জানাজানি হলে এসব থেকে বিরত থাকতে কঠোরভাবে নিষেধ করা হয় মুছাকে। এরপরও সে আদুরীকে বিয়ের জন্য গোপনে চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। কিন্তু আদুরীর পরিবার রাজি না থাকায় তাকে ভিন্নপথ বেছে নেওয়ার পরামর্শ দেয় মুছা।
আদুরীর পরিবারের দাবি, আদুরীকে ওই কীটনাশক সংগ্রহ করে দিয়েছিল মুছা। পরবর্তীতে চলতি মাসের ১৭ এপ্রিল রাত ১০টার দিকে নিজ শয়নকক্ষে কীটনাশক পান করে অসুস্থ হয়ে পড়ে আদুরী। পরিবারে লোকজন জানতে পেরে আদুরীকে উদ্ধার করে দ্রুত স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। অবস্থার অবনতি হওয়ায় রাতেই বগুড়ার শজিমেক হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আদুরী রোববার(২৪ এপ্রিল) রাতেই মারা যায়।
নিহত আদুরীর মামা আব্দুর রহিম অভিযোগ করে বলেন, বেশ কিছুদিন ধরেই মাদরাসায় আসা-যাওয়ার পথে তাকে উত্ত্যক্ত করছিল মুছা। প্রতিবাদ করায় তার ওপর আরো ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। এমনকি মাদরাসার অনুষ্ঠানের আদুরীর একটি ছবি সংগ্রহ করে সে। পরবর্তীতে সেটি এডিটিং করে অশ্লীল ছবি বানিয়ে আদুরীকে দেখানো হয়। সেই সঙ্গে ওই বখাটের সঙ্গে সম্পর্ক না গড়লে ছবিটি ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে তাকে ব্ল্যাকমেল করা হয়। পাশাপাশি আত্মহত্যা করতে আদুরীকে প্ররোচনা দেওয়া হয়েছে বলেও দাবি করেন আব্দুর রহিম।
এ বিষয়ে শেরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শহিদুল ইসলাম বলেন, অত্র থানার এক শিক্ষার্থীর অপমৃত্যুর ঘটনায় বগুড়া সদর থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে বলে জেনেছি। তবে এ মৃত্যু নিয়ে এলাকায় খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে। তবে কেউ কোন অভিযোগ দিলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Posted ৩:২২ অপরাহ্ণ | সোমবার, ২৫ এপ্রিল ২০২২
Alokito Bogura। Online Newspaper | MTi SHOPON MAHMUD