আবু বকর সিদ্দিক,শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি: বগুড়ার শেরপুর উপজেলার ধান উৎপাদনের জন্য খুবই উপযোগী। খাদ্য উদ্বৃত্ত এ উপজেলার কৃষকরা আমন ধানের ভালো দাম পাওয়ায়, এখন শীত উপেক্ষা করেই শুরু করে দিয়েছে ইরি-বোরো ধানের আবাদ। সকাল সকাল কোদাল হাতে বের হয়ে পরেন কৃষকরা। ইতিমধ্যে ইরি-বোরো বীজতলা তৈরীর কাজ শেষ করে ইরি-বোরো চারা রোপনে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে।
শেরপুর উপজেলার কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার আব্দুল হান্নান জানান, বড় ধরনের কোন প্রাকৃতিক দূর্যোগ না থাকায় গেলো মওসুমে এ উপজেলার কৃষকরা লক্ষ মাত্রার চেয়ে বেশী মোট ২২ হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের আবাদ করে বাম্পার ফলন পেয়েছিলো। দামও পেয়েছে বেশ ভালো। ধানের দাম ভালো পাওয়ায় কৃষকরা ধান চাষে খুবই আগ্রহী হয়ে ওঠেছে।
শেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের অফিসার আব্দুল হান্নান জানায়, উপজেলায় এবার ২১ হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো ধানের আবাদ করার লক্ষমাত্রা ঠিক করা হয়েছে। কৃষকরা এ মওসুমে কোন জমি পতিত না রেখে ইরি-বোরো ধানের আবাদ করার কথা জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে বগুড়ার শেরপুর উপজেলার বিশালপুর ইউনিয়নের বামিহাল গ্রামের কৃষক শ্রী লক্ষণ চন্দ্র আলোকিত বগুড়া’কে জানান, আমরা এবার আমন ধানের দাম ভালো পাইছি। তাই আগেবাগেই ইরিবোরো ধানের চাষ শুরু করছি।
বিশালপুর ইউনিয়নের কহিতকুল গ্রামের কৃষক শাজাহান আলী, মিজানুর রহমান, হাফিজার, আঃ রশিদ জানান, আমরা এবার কোন জায়গা খালি রাখুমনা। ধানের দাম ভালো পাইছি।
এ উপজেলার খানপুর ইউনিয়নের খাগা এলাকার কৃষক আব্দুর রহিম গোলাম রুসুল জানান, এই এলাকায় নিচু জমি গুলো ঢলে পানি বেজে গিয়ে ধান নষ্ট হয়,তাই আমরা আগাম জাতের ইরি-বোরো ধানের আবাদ করতাছি। যাতে বর্ষা আসার আগেই ধান কাটতে পাই।
এদিকে ইরি-বোরো ধানের চারা রোপন শুরু হওয়ার পর থেকে কৃষি শ্রমিকদের কদরও বেড়ে গেছে। তারাও এখন ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। এ ব্যাপারে শেরপুর উপজেলার বিশালপুর ইউনিয়নের চুরকুটা গ্রামের কৃষি শ্রমিক আদিবাসী রানা মাহাতা ও শ্রীমতি চম্পা রানী মাহাতা জানান, আমরা এখুন খুব চাপে আছি। একেক দিন দুইতিন জন করে গেরস্থ আমাগরে কামলা নিবার চায়। আমরা তখন বিপদে পড়ে যাই। একজনের কাছেই তো আমাগোরে কাজ করা লাগে।
আরেক শ্রমিক শ্রীমতি ববিতা রানী মাহাতা জানান, কিছু দিন তো বয়ে থাকলাম। এহনতো আমাগোরে খুব কদর। এহন আমরা দিনে ৫/৬শ টাকা হাজিরা পাই।
শেরপুর উপজেলা কৃষি অফিসার ফারজানা আক্তার আলোকিত বগুড়া’কে জানান, কোন দূর্যোগ না থাকায় উপজেলায় যেমন এবার আমনের লক্ষমাত্রা ছাড়িয়েছিলো, তেমনি ইরি-বোরো ধান চাষের লক্ষমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে আমরা আশা করছি। কৃষকদেরও প্রত্যাশা আবহাওয়া অনুকুল থাকায় তারা লক্ষমাত্রার চেয়ে বেশী জমিতে ইরি-বোরো ধানের আবাদ করবে। আমরা কৃষকদের নানাভাবে সহযোগিতা করে আসছি। আমাদের লোকজন সবসময় কৃষকদের পাশে আছে।
Posted ৩:৪৫ অপরাহ্ণ | রবিবার, ২৯ জানুয়ারি ২০২৩
Alokito Bogura || আলোকিত বগুড়া | MTi SHOPON MAHMUD