মাইনুল হাসান, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার: বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে শুক্রবার বিকেলে ভিডিজি কার্ডের সুবিধাভোগীদের লটারীতে ভাগ্য নির্ধারন করায় আলোচনায় এসেছেন কামালপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান রাছেদুউজ্জামান রাছেল। লটারিতে ভাগ্য নির্ধারনী ঘটনায় শনিবার দিনভর ছিলো এই আলোচনা সবার মুখে মুখে।
স্থানীয়রা জানান, ইউনিয়ন পরিষদ সমাজের বিভিন্ন শ্রেণির মানুষদের বিভিন্ন রকমের সুযোগ-সুবিধা দিয়ে থাকেন। এর মধ্যে অন্যতম হলো গরীব-অসহায়দের জন্য ভার্নারেবল গ্রুপ ডেভেলপমেন্ট (ভিজিডি) কার্ড বিতরণ। কার্ডধারীরা প্রতিজন মাসে পেয়ে থাকেন ৩০ কেজি করে চাল। দুই বছর ধরে পাবেন এ চাল। এ জন্য ৯ ওয়ার্ডের বিভিন্ন গ্রাম থেকে প্রায় ৩ হাজারের বেশি অনলাইনে আবেদন পরেছিলো এ ভিজিডি কার্ডের জন্য। এ চাল দিয়ে সংসারের অনেক সহায়তা হয়ে থাকে তাদের। কিন্তু এ কার্ড পেতে গেলে পরিষদের চেয়ারম্যান-মেম্বার ও দালালদের হাতে দিতে হয় মোটা অংকের টাকা। এরকম টাকা নেওয়ার ঘটনা ওপেন সিক্রেট। এ বছর কামালপুর ইউনিয়নের দুস্থদের জন্য বরাদ্দ পাওয়া গেছে ২৬৫টি কার্ড। ইউনিয়ন পরিষদের জনসাধারণের মধ্য এ কথা জানানাজি হয়ে গেলে কার্ড নেওয়ার জন্য হুমরি খেয়ে পরেন দুস্থ পরিবারের মহিলা সদস্যরা। হঁাস, মুরগী ও ডিম বিক্রি করা ছাড়াও ধার দেনা করে কেউ কেউ টাকার যোগার করেন এই কার্ড পেতে। এ কথা জানার পর কামালপুর ইউপি চেয়ারম্যান রাছেদুউজ্জামান রাছেল ইউনিয়ন পরিষদের সকল সদস্যদের ও সচিবকে নিয়ে সভা করেন। তাতে তিনি সিদ্ধান্ত নেন লটারিতে তাদের ভাগ্য নির্ধারন করা হবে। শুক্রবার বিকেলে হয়ে গেলে তাদের ভাগ্যনির্ধারনী অনুষ্ঠান। তাতে প্রধান অতিধি ছিলেন, উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রেজাউল করিম মুন্টু মন্ডল। সকল সদস্য, ইউপির আওতায় সকল গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও সুবিধাভোগীরা উপস্থিত ছিলেন।
বক্তব্যে চেয়ারম্যান রাছেদুউজ্জামান রাছেল বলেন, আমার ইউপিতে এসব কর্মকান্ডে অনেক দুর্নাম রয়েছে। অতিতের চেয়ারম্যান-মেম্বারা কি করেছেন তা আমি বলতে চাই না তবে আমি স্বচ্ছতার সাথে জনগণের সেবা করতে চাই। বক্তব্যে ইউপি সচিব আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমার চাকুরীর জীবনে এমন ঘটনা বিরল। বাড়ীর কর্তা যদি সৎ হয় তবে সবাইকে সৎ থাকতে হয়। এমন সাহসী ঘটনা আর কোথাও ঘটবে কিনা তা আমার জানা নেই। এরপর এক এক করে শুরু হয়ে যায় লটারীর কার্যক্রম। তাতে দুস্থদের সাথে আসা একজন ছোট শিশুকে মঞ্চে ডেকে নিয়ে তুলতে থাকেন লটারির টিকিট।
কামালপুর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের কাশাহার গ্রামের লটারিতে নাম ওঠা শফিকুল ইসলামের স্ত্রী মমতা বেগম বলেন, আমার একটি সন্তান প্রতিবন্ধি। কষ্টে সংসার চলে আমার। এই কার্ডটি পাওয়া আমার খুব দরকার ছিলো। আমি জানি কার্ডটি পেতে টাকা-পয়সা লাগবে। ডিম, মুরগী বিক্রি এবং ধার-দেনা করে কিছু টাকার যোগারও করেছিলাম। লাটারিতে বিনা টাকায় এ ধরনের কার্ড পাবো স্বপ্নেও ভাবিনি আমি।
Posted ৯:২০ অপরাহ্ণ | শনিবার, ১৯ নভেম্বর ২০২২
Alokito Bogura || আলোকিত বগুড়া | MTi SHOPON MAHMUD