১৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ভালোবাসা দিবস। ভালোবাসা দিবসের প্রধান উপহার ফুল। আর সে ফুলের মধ্যে সবার পছন্দ গোলাপ। তাও আবার লাল রঙের। আর এই ভালবাসা দিবসে সুবাস ছাড়াবে সিরাজগঞ্জের ফুল। তবে সারা বছর জুড়েই থাকে ফুলের চাহিদা। শুধু বিশেষ দিনগুলোতে ফুলের চাহিদা বেড়ে যায় চারগুন।
জেলার ফুল চাষিরা জানান, বছরের ফেব্রুয়ারী মাসে বিশেষ কয়েকটা দিবস থাকায় ফুল কেটে বাজারজাত করা এবং পরিচর্যায় মহাব্যস্ত সময় পার করছেন। প্রতিবছর বিশ্ব ভালোবাসা দিবসসহ তিনটি বিশেষ দিনকে টার্গেট করে ফুলের বাজার ধরতে এ অঞ্চলের ফুলচাষিরা ব্যাপক প্রস্তুতি নেন। এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে ১১ ফেব্রুয়ারী থেকেই চাষিরা ফুল কেটে প্রস্তুত করছেন।
এদিকে ফুল চাষের মাধ্যমে চাষিরা তাদের ভাগ্য বদলের পাশাপাশি সৃষ্টি করেছে অনেক লোকের কর্মসংস্থান। আর এই ফুল চাষে লাভ বেশি হওয়াতে প্রতি বছর ফুল বাগানের সীমানা বাড়াতে ব্যস্ত প্রান্তিক ফুল চাষিরা। তবে তাদের মতে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে তারা আরো লাভবানসহ আর্থিক ভাবে স্বচ্ছল হবে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার রতনকান্দি ইউনিয়নরে একডালা গ্রামের সহদর ফুল চাষি শহিদুল ইসলাম ও আমিনুল ইসলাম কয়েক বছর আগে ৩বিঘা জমিতে গোলাপ, রজনীগন্ধা ও গাদা ফুলের চারা দিয়ে চাষ শুরু করেন। পরবর্তীতে ফুল চাষের মাধ্যমে তারা লাভবান হচ্ছে বুঝতে পেরে এবার প্রায় ১০ বিঘা জমিতে দেশী-বিদেশী লাল, হলুদ, সাদা গোলাপ, গাদা, রজনীগন্ধা, গ্যাডিয়াস ফুলের ব্যাপক চাষ করছে।
এবিষয়ে ফুলচাষি শহিদুল ইসলাম বলেন, এবছর অন্যান্য খরচ বাদ দিয়ে প্রায় ৫ লাখ টাকা লাভ হবে। সিরাজগঞ্জ-বগুড়াসহ বিভিন্ন স্থানে তারা পরিবহণের মাধ্যমে ফুল বিক্রি করে থাকেন। আবার কেউ কেউ বাগান থেকে ফুল পাইকারী কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।
ফুল চাষি আমিনুল ইসলাম বলেন, ১০ বিঘা জমিতে বিভিন্ন ফুলের আবাদ করেছি। ফুলে কোয়ালীটি ও ফলন ভাল হয়েছে। দামও চড়া পাচ্ছি। জেলায় এবার ভালবাসা দিবসে আমাদের ফুলের সুবাস ছড়াবে।
বগুড়া থেকে আসা পাইকার (ফুল ব্যবসায়ী) মো, আসলাম উদ্দিন বলেন, আমার ফুলের দোকান বগুড়া শহরে। তিনি চার বছর এখান থেকেই ফুল সংগ্রহ করি। এখানকার ফুলের কোয়ালীটি খুব ভাল, চাহিদাও বেশী। তাই ভালবাসা দিবসের তিন আগে ফুলের বায়না করে গেলাম।
সিরাজগঞ্জ এস এস রোডের ফুলের দোকানদার রতন ঘোষ, রাজ কুমার শাহ জানান, এবার রোজ ডেতে ফুলের চাহিদা খুব বেশী। আবার ভালবাসা দিবস আসন্ন। ভালবাসা দিবসে ফুলের চাহিদা বাড়ে চারগুন। এক পিস গোলাপের মুল্য ৩০/৪০ টাকা। বিশেষ দিনে এর মুল্য দাড়ায় ৫০/৬০ টাকা। ফুলের দাম এবার অনেক বেশী। আবার সঠিক সময়ে ফুল চাষিরা ফুল দিতে পারেনা। ফুল আমদানী অনেক কমে গেছে। ভালবাসা দিবস নিয়ে চিন্তায় আছি।
সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. রোস্তম আলী জানান, সিরাজগঞ্জে অতিতে কোন ফুলচাষি ছিলোনা। বর্তমানে দুইজন ফুল চাষি তারা নিজ উদ্যোগে চাষ শুরু করেন। এরপর থেকে আরো ১/২জন চাষ শুরু করলে কৃষি বিভাগের নজরে আসে। আমরা ইতোমধ্যে বাগান পরিদর্শনের মাধ্যমে অন্যান্য কৃষকদের ফুল চাষে আগ্রহী করতে চেষ্টা করছি।
Posted ৩:৫২ অপরাহ্ণ | রবিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২
Alokito Bogura। Online Newspaper | MTi SHOPON MAHMUD