বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবর রহমান মজনু’র বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করেছেন শেরপর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক বদরুল ইসলাম পোদ্দার ববি। তিনি ১৮ এপ্রিল মঙ্গলবার দুপুরে বগুড়া প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন।
তিনি তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, গত ২০২২ সালে শেরপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত মাসে শেরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ ও পৌর আওয়ামীলীগে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষনা করা হয়। সেই কমিটি এবং ইউনিয়ন ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের কমিটিতে নির্যাতিত নিপিড়িতদের অন্যায়ভাবে দল হইতে বাদ দেওয়া হয়েছে।
বগুড়া জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মজিবর রহমান মজনু সম্পর্ণ অগঠনতান্ত্রিক অসাংগঠনিক এবং স্বৈরতান্ত্রিকভাবে নিজের মনগড়া আজ্ঞাবাহী ব্যক্তিদের দ্বারা শেরপুর উপজেলা ও পৌর আওয়ামী লীগের পকেট কমিটি গঠন করেছেন। এতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী কর্মীদের কর্মীদের মাঝে ক্ষোভ ও হতাশার সৃষ্টি হয়েছে।
শেরপুর পৌর আওয়ামীলীগের সম্মেলনে মজিবর রহমান মজনুর পুত্র সারোয়ার রহমান মিন্টুকে সভাপতি প্রার্থী ঘোষনা দেন এবং বলেন অন্য কোন ব্যক্তি সভাপতি পতে প্রার্থী হলে তাকে দল হইতে বহিষ্কার করা হবে। পরে তার পুত্র বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সভাপতি নির্বাচিত হন এবং সাধারন সম্পাদক পদে একজন বিতর্কিত তার আজ্ঞাবাহ ব্যক্তি যার পিতা স্বাধীনতা বিরোধী, ভাই বিএনপি’র নেতা, ও ভাতিজা যুবদলের উপজেলা সভাপতি, অন্য ভাইয়েরা জামাতের রাজনীতির সাথে সেই বিতর্কিত ব্যক্তি গোলাম হোসেনকে সাধারন সম্পাদক হিসাবে ঘোষনা দেয়া হয়েছে।
একই ভাবে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে শেরপুর উপজেলার কুসুম্বী ইউনিয়নের যুদ্ধাপরাধী ইসরাত আলী তার পুত্র সাইফুল ইসলামকে কুসুম্বী ইউনিয়নের সভাপতি করা হয়েছে। শেরপুররের আরেকজন কুখ্যাত স্বাধীনতা বিরোধী জেলা সভাপতির শ্বশুড় মান্নান বিশ্বাস তাহার পুত্র মোকারিম হোসেন রবিকে উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি করা হয়েছে। এ রকম সকল কমিটিতেই স্বাধীনতা বিরোধী পরিবারের সন্তানদের নেতা নির্বাচিত করা হয়েছে। এছাড়াও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পদে ছোনকার মামুনকে ঘোষনা করা হয়েছে যার পিতা বিএনপির সহ সভাপতি।
এছাড়াও যাদেরকে শেরপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে তারা স্বাধীনতা বিরোধী পরিবারের সন্তান ও নানা ভাবে বিতর্কিত।
তিনি তার লিখিত বক্তব্যে আরো বলেন, আওয়ামীলীগের উপজেলা সভাপতি পদে বিতর্কিত এক ব্যক্তি এ্যাডঃ গোলাম ফারুক ও সাধারণ সম্পাদক পদের মত গুরুত্বপূর্ণ স্থানে তার আজ্ঞাবাহী মোঃ সুলতান মাহমুদ ঘোষনা করেছেন সেক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের নির্দেশনা মানা হয়নি। এছাড়াও জেলা সভাপতি মজনু প্রতারনা ও জালিয়াতি করে ভুয়া জাল মুক্তিযোদ্ধা সেজে সরকারের ভাতা উত্তোলন, ছেলেকে রাজউক এ চাকুরী, মেয়েকে ইউনিয়ন পরিষদে চাকুরী সহ বিভিন্ন সুবিধা ভোগ করেছেন।
তিনি অভিযোগ করেন শেরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় নির্মানের জন্য প্রায় ২৭ লাখ টাকা আত্মসাৎ, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নামে ভূয়া জমি রেজিঃ করে ১২ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন । তিনি টাউন ক্লাব পাবলিক লাইব্রেরি জায়গায় নিজ নামে নামকরণ করে ‘মজিবর রহমান মজনু বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়’ এবং নিজে টাউন ক্লাব পাবলিক লাইব্রেরী মহিলা কলেজের সভাপতি নিযুক্ত হয়ে, নিজের ছেলে সরোয়ার রহমান মিন্টু (সভাপতি, শেরপুর শহর আওয়ামীলীগ) এর নামে টাউনক্লাব পাবলিক লাইব্রেরীর সম্পত্তি থেকে ২ শতাংশ জমি লিখে দেয় এবং সেই জমি মহাসড়কে অধিগ্রহনের মাধ্যমে কোটি টাকাসহ বিভিন্নভাবে প্রায় তিন কোটি টাকা দূর্নীতির মাধ্যমে আত্মসাৎ করে। এছাড়াও তিনি নিজে একজন ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা হয়েও মুক্তিযোদ্ধা টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের সভাপতি সেজে প্রায় ৫ কোটি টাকার নিয়োগ বাণিজ্যে অনিয়ম দূর্নীতি করেছেন।
তিনি সংবাদ সম্মেলনে জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মজনু এর সাংগঠনিক অনিয়ম দুর্নীতি, সঠিক তদন্তের মাধ্যমে সংগঠনের এই অনিয়ম দূর করে শেরপুর উপজেলার সকল পর্যায়ের কমিটি বাতিল করে ত্যাগী বাদপড়া নেতাদের অর্ন্তভুক্ত করে পুনরায় সকল পর্যায়ে কমিটি গঠন করার জন্য মানণীয় প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য অনুরোধ ও দাবী জানান।
Posted ১০:২৭ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৩
Alokito Bogura || Online Newspaper | MTi SHOPON MAHMUD