রাজবাড়ী প্রতিনিধি: ২০১৮ সালে রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলার বাহাদুরপুর ইউনিয়নে আহম্মদ আলী মোল্লা মেমোরিয়াল ডিসএ্যাবল্ট এন্ড কলেজ নামে খোলা হয় একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠা করেন ইউনিয়নের আহম্মদ আলী মোল্লার ছেলে মোঃ আল মামুন। পিতার নামে প্রতিষ্ঠান করে নিজেই বনে যান প্রধান শিক্ষক।
প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠা করার পর থেকে অর্থের বিনিময়ে প্রতিষ্ঠানের সহকারি শিক্ষক ও কর্মচারী নিযোগ, প্রতিষ্ঠানে প্রতিবন্দ্বীদের ভর্তি, প্রতিবন্দ্বীদের প্রতিবন্দ্বী ভাতার কার্ড ও প্রতিবন্দ্বী শিক্ষার্থীদের সরকারি ঘর বরাদ্দ দেওয়ার নাম সহ বিভিন্ন নামে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক মোঃ আল মামুনের বিরুদ্ধে।
ভুক্তভোগীরা জানান, প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও কর্মচারীদের মাধ্যমে জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিবন্ধীদের তালিকা করা হয়। প্রতিবন্দ্বীদের বিদ্যালয়ের সদস্য করার নামে দুই থেকে তিন হাজার টাকা করে নেওয়া হয়। এছাড়াও প্রতি মাসে সঞ্চয়ের নামে নির্দিষ্ট পরিমান টাকাও নেওয়া হয়। প্রতিষ্ঠনের শিক্ষার্থীদের প্রতিবন্দ্বী কার্ড করে দেওয়ার নামে ১ হাজার থেকে ৩ হাজার টাকা করে নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও সরকারি ঘর দেওয়ার কথা বলে প্রতিবন্দ্বীর শিক্ষার্থী পরিবারের কাছ থেকেও টাকা নেওয়া হয়েছে। ভুক্তভোগীদের এসব অভিযোগ শুধুমাত্র প্রধান শিক্ষক মো. আল মামুনের বিরুদ্ধে।
জানা যায়, এ বিষয়ে ইতিপূর্বে কয়েকটি প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশ হয়েছে। সংবাদ প্রকাশের পর প্রষ্ঠিানটির স্থান ও নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। আহম্মদ আলী মোল্লা মেমোরিয়াল ডিসএ্যাবল্ট স্কুল এন্ড কলেজ এর পরিবর্তে আহমদ আলী মোল্লা স্মৃতি এতিম প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় নামে নাম করণ করা হয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটির এ সকল কর্মকান্ডে সুষ্ট বিচারের আশায় গত রোববার (১৯ মার্চ) প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক আল মামুনের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পাংশা মডেল থানায় নিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী পরিবার।
এ অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক আল মামুন বলেন, আমাদের এখানে যারা আবেদন করবে তাদের যাতায়াত খরচসহ একটি খরচ জমা দিতে বলছিলাম। আমরা তো হাওয়া খাই না, আমাদেরও তো কিছু লাগে, সরকারি অনুদান তো আমরা পাই না। আমাদের তো কিছু খরচ আছে এজন্য তাদের কাছ থেকে ১০০০ থেকে ১৫০০ টাকা করে নেওয়া হয়।
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মোঃ রবিউল ইসলাম বলেন, প্রতিবন্দ্বীদের অর্থ আত্মসাতের বিষয় নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর রাজবাড়ী জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে আমাদেরকে তদন্তের জন্য নির্দেশনা দেয়। আমরা বিষয়টি তদন্ত পূর্বক জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তর বারাবর তদন্ত প্রতিবেদন পাঠিয়েছি।
এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুর রাজ্জাক শেখ বলেন, আমি দুই মাস হলো প্রতিষ্ঠানের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছি। সম্প্রতি হওয়া অভিযোগের বিষয়ে আমি কিছু জানি না। তবে সুনেছি ২০২১ সালে এ সকল অভিযোগে রাজবাড়ী আদালতে একটি মামলা হয়েছিলো। মামলার প্রেক্ষিতে তদন্ত হয়েছে। এখন পর্যন্ত আমি কোন ফলাফল পাইনি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ জাফর সাদিক চৌধুরী বলেন, এ বিষয়য়ে অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আমি এখানে নতুন যোগদান করেছি। সুনেছি এর আগেও এই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ হয়েছে। সে সকল অভিযোগ উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা তদন্তপূর্বক উর্দ্ধতন কর্মকর্তা বরাবার প্রতিবেদন পাঠিয়েছে। উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Posted ১২:২৩ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ২৪ মার্চ ২০২৩
Alokito Bogura। আলোকিত বগুড়া | MTi SHOPON MAHMUD