নানা সমস্যায় জর্জরিত বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি কেবল নেই আর নেই মধ্যে রয়েছে। এ অবস্থায় আগত রোগীরা নানা সমস্যায় ভুগছেন। বিশেষ করে নারী, পুরুষ ও শিশুদের ওয়ার্ডের অধিকাংশ বৈদ্যতিক ফ্যান দীর্ঘ দিন যাবৎ বিকল থাকায় বর্তমানে ভর্তি রোগীরা ত্রাহী অবস্খায় পড়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ভূক্তভোগী সুত্রে জানা গেছে, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি স্থানীয়দের কাছে হাসপাতাল হিসাবে পরিচিত। তবে যেই নামেই পরিচিত হোক না কেন, এখানে সুইপার থেকে শুরু করে বিষেশজ্ঞ চিকিৎকগন সেবা দেওয়ার জন্য অপ্রতুল। হাসপাতালে ১০ জন বিষেশজ্ঞ চিকিৎসক প্রয়োজন হলেও সেখানে রয়েছে দুই জন। রোগীদের জন্য রাধুনীর পদটি দীর্ঘ ২ বছর যাবৎ খালি থাকলেও ভাড়া করা রাধুনী দিয়ে কোন মতে চলছে হাসপাতালটি। হাসপাতালের রোগীদের খাবারের মান বলে কিছু নেই। যে জন্য কোন রোগী বাহির থেকে খাবার সংগ্রহ করছেন। প্রয়োজনীয় পরিমান গুরুত্বপূর্ন ওষুধ নেই বললেই চলে। হার্ড, ডায়াবেটিস, এজমা, শরীরের বিভিন্ন স্থানে ব্যাথা নাশক ও শিশুদের ওষুধ হাসপাতালটিতে নেই বললেই চলে। রোগীদের নিন্ম গ্যাসের ট্যাবলেট সহ বিভিন্ন রোগ বালাইয়ের কম দামের ওষুধ দেওয়া হয় । চরাঞ্চল সহ দুর দুরান্ত থেকে আসা রোগীরা প্রয়োজনীয় ওষুধ না পেয়ে হতাশ হয়ে চলে যাওয়া ছাড়া উপায় থাকছেনা।
একটি মাত্র অপারেশন থিয়েটার থাকলেই বিগত ১০ বছরের মধ্যে সেটি তালা খুলছে বলে কেউ বলতে পারেন না। এমনকি হাসপাতালটিতে নেই কোন সরকারী মোবাইল নম্বর। আবার ২টি ওয়ার্ডে ২১টি ফ্যানের মধ্যে মাত্র ২টি ফ্যান চালু রয়েছে। মহিলা ও শিশু ওয়ার্ডে ফ্যান নেই বললেই চলে। যাতে করে ভর্তি হওয়া রোগীদের ফ্যানের অভাবে মহিলা ও শিশুরা গরমে হাসফাস করছেন সব সময় ধরে।
সদর ইউনিয়নের দীঘলকান্দি গ্রাম থেকে আসা রোগী ওসমান সরকার (৭০) বলেন, আমি ১৫ দিন যাবৎ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছি। কিন্তু চিকিৎসা সেবা বলে কিছু নেই এখানে। বাড়ীতে অসুবিধা থাকায় বৃদ্ধ বয়সে কষ্টে মধ্যে হাসপাতালে ভর্তি থাকতে বাধ্য হয়েছি। একই গ্রামের শহিদুল ইসলাম (৬০) কি করব, উপায়তো নেই আমার । কষ্ট হলেও ভর্তি থাকতে হচ্ছে আমাকে।
এ ব্যাপারে সদর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড সাবেক সদস্য মনিরুজ্জামান বাবু বলেন, আমি কয়েকদিন আগে হাসপাতালে গিয়াছিলাম আমার গ্রামের রোগী দেখতে। দেখি হাসপাতালে ফ্যানের অভাবে রোগীরা মুখ দিয়ে হা করে নিশ্বাস নিচ্ছেন ।
রোগীদের ত্রাহী মধূসুদন অবস্থা দেখা দিয়েছে এই গরমে। রাতের বেলা ১টি ওয়ার্ডে ১টি বাল্ব কোনায় জললেও অন্য রোগীরা মোবাইলের আলো দিয়ে খাওয়ার কাজ সারছেন। হাসপাতাল অব্যবস্থাপনার অবস্থা বর্তমানে অবনর্ণীয়।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ( টি এইচ এ) ডা: মো: মাহবুবুর রহমান সর্দার আলোকিত বগুড়াকে বলেন, হাসপাতালের সমস্যা আছে ঠিকই, আমারও রয়েছে সীমাবদ্ধতা। আমি ইচ্ছে করলেই সমস্যা রাতারাতি সমস্যা সমাধান করে দিতে পারি না। সমস্যা গুলোর জন্য আমি ইউএনও মহোদয় ও উপজেলা চেয়ারম্যানের সাথে আলোচনা করেছি। আশা করছি খুব শীঘ্রই সমস্যাগুলো সমাধান হয়ে যাবে।
Posted ১:২৯ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ১২ জুন ২০২৩
Alokito Bogura || আলোকিত বগুড়া | MTi SHOPON MAHMUD