দুপচাঁচিয়ায় প্রধান শিক্ষককে লাঞ্ছিতের অভিযোগ পাওয়া গেছে এক সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে। উপজেলার বেড়–ঞ্জু দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে গত ২১মে শনিবার লাঞ্ছিতের এঘটনাটি ঘটেছে। এ ঘটনায় লাঞ্ছিত প্রধান শিক্ষক মাহমুদুর রশীদ বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতির নিকট লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগে জানা যায়, বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জামাল উদ্দিন গত ১৯মে অনুমতি ছাড়াই বিদ্যালয়ে না আসার কারণে প্রধান শিক্ষক তাকে শিক্ষক হাজিরা খাতায় অনুপস্থিত দেখান।
ঘটনারদিন গত ২১মে জামাল উদ্দিন বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়ে শিক্ষক হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেন। পরে তিনি প্রধান শিক্ষকের নিকট উপস্থিত হয়ে জিজ্ঞেস করেন তাকে কেন ১৯তারিখে অনুপস্থিত দেখানো হয়েছে। এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক তাকে জানান, কোনো আবেদন বা অনুমতি ছাড়া বিদ্যালয়ে না আসলে শিক্ষক হাজিরা খাতায় অনুপস্থিত থাকবে এটাই নিয়ম। এ নিয়ে উভয়ের মাঝে কথাবার্তার এক পর্যায়ে সহকারী শিক্ষক জামাল উদ্দিন প্রধান শিক্ষক মাহমুদুর রশীদকে শারীরিক ভাবে লাঞ্ছিত সহ কিল ঘুষি মারেন।
এসময় উপস্থিত শিক্ষকগণ তাকে রক্ষা করেন। এ বিষয়ে ওইদিনই প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতির নিকট প্রতিকার চেয়ে লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি গত ২২মে জরুরী সভা করেন। সভায় প্রধান শিক্ষকের ৫দফা অভিযোগের সত্যতা নিরূপনের জন্য বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক রোস্তম আলীকে আহবায়ক করে ৫সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। তদন্ত কমিটিকে ১০কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন কমিটির সভাপতির নিকট জমা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গতঃ গত ২০১৭সালে সহকারী শিক্ষক জামাল উদ্দিনের বিরুদ্ধে দন্ডবিধির ৪২০ধারায় আদালতে একটি মামলা দায়ের হয়। ওই মামলায় অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিজ্ঞ আদালত তাকে ২০১৯সালে ৩বছরের সশ্রম কারাদন্ড এবং ৫হাজার টাকা অর্থদন্ড অনাদায়ে আরও ৩মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন। তার কারাদন্ডের কারণে বিদ্যালয় পরিচানা পর্ষদ একটি সভা ডেকে দন্ডপ্রাপ্ত জামাল উদ্দিনকে সাময়িক বরখাস্ত করেন। পরবর্তীতে জামাল উদ্দিন উচ্চ আদালতে রায়ের বিরুদ্ধে আপীল করে জামিনে বেরিয়ে আসেন এবং ২০২০সালের ৫জানুয়রী তার সাময়িক বরখাস্ত প্রত্যাহারের জন্য বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের নিকট আবেদন করেন। আবেদনের প্রেক্ষিতে সভা ডেকে মানবিক দিক বিবেচনা করে শর্ত সাপেক্ষে বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদ তার সাময়িক বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহার করে নেন।
অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষক জামাল উদ্দিন তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে মুঠোফোনে বলেন, পারিবারিক কারণে ১৯মে ছুটির প্রয়োজন হওয়ায় ১৮মে প্রধান শিক্ষককে বিষয়টি আমি জানাই। প্রধান শিক্ষক বিষয়টি দেখবেন বলে আমাকে মৌখিকভাবে বলেন। আদালত কর্তৃক দন্ডাদেশের বিষয়ে তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে মামলাটি হয়েছিল তা জানা ছিল না। পরবর্তীতে রায়ের আগে বিয়ষটি আমি জানতে পারি এবং জেলে থাকা অবস্থায় আপীলের মাধ্যমে জামিনে বের হয়ে আসি।
বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ফরহাদ আলী মুঠোফোনে জানান, প্রধান শিক্ষকের অভিযোগ পাবার পর ৫সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিট গঠন করে দিয়েছি। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Posted ৯:৫৫ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ২৪ মে ২০২২
Alokito Bogura || আলোকিত বগুড়া | MTi SHOPON MAHMUD