শারীরিক প্রতিবন্ধী ফজলু। জন্মগতভাবে দুই হাত ও একটি পা নেই। তবে এ প্রতিবন্ধকতা তার চলার পথে বাঁধা হয়ে দাড়াতে পারেনি। এক পা দিয়ে লিখে এবার এইচএসসি পরীক্ষায় ২.৭৫ পেয়ে পাস করেছেন। সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার ধুকুরিয়াবেড়া ইউনিয়নের চরগোপালপুর গ্রামের সাহেব আলীর ছেলে ফজলু।
জানা যায়, বাড়ি থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার হেঁটে গিয়ে মিটুয়ানী উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন। তাকে স্কুলে নিয়ে যেত তার ছোট বোন আসমা। সেখান থেকেই এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে জিপিএ-৩.৫৬ পেয়ে পাস করেছেন ফজলু। জেএসসিতে ৩.৭৫ পিইসিতে ২.১৭ ও বেলকুচির দৌলতপুর ডিগ্রি কলেজ থেকে এবার এইচএসসি ২.৭৫ পেয়েছে।
এবিষয়ে ফজলু বলেন, অনেক কষ্টে এক পা দিয়ে লাফিয়ে স্কুলে গিয়েছি। বই, খাতা, কলম আসমা নিয়ে যেত। তবে সে না গেলে আমার স্কুলে যাওয়া হত না। এই রেজাল্ট করতে পেরে আমি খুশি। সবার সহযোগিতায় আমি আরো এগিয়ে যেতে চাই।
ফজলুর বাবা সাহেব আলী বলেন, ২০১৭ সালে ফেসবুক থেকে ৭৬ হাজার টাকা সংগ্রহ করে দিয়েছিলেন মানুন বিশ্বাস। সেই টাকা দিয়েই লেখাপড়া করছে আমার ছেলে। এই টাকাটা না হলে হয়তো আমার ছেলের এইচএসসি পাশ হতো না।
তিনি আরও বলেন, দিনমজুরী করে কোর রকম সংসার চালায়। এর মধ্যে লেখাপড়ার খরচ জোগাব কীভাবে। টাকার অভাবে কোনদিন প্রাইভেট পড়াতে পারিনি, বইও কিনে দিতে পারিনি। ফজলুর নামে একটি প্রতিবন্ধী ভাতা কার্ড আছে। তা দিয়েই ওর লেখাপড়ার খরচ চলে। ৯ সদস্যের সংসার আমার একার উপার্জনের উপর নির্ভরশীল।
ফজলুর মা সারা খাতুন বলেন, ২০০০ সালে ফজলু বিকলাঙ্গ অবস্থায় জন্ম নেয়। ছোট মেয়ে আসমা ফজলুরকে লেখাপড়ায় সাহায্য করে। কিছু কিছু কাজ নিজেই করতে পারে। কিছু কাজে তাকে সাহায্য করতে হয়।
দৌলতপুর ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মাসুদ রানা বলেন, ফজলু লেখাপড়ায় ভালো, স্মরণ শক্তি প্রখর। তার ফলাফলে আমরা খুশি।
Posted ৫:১০ অপরাহ্ণ | সোমবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২
Alokito Bogura। Online Newspaper | MTi SHOPON MAHMUD