নাম তার মনিন্দ্রনাথ বর্মণ (৭০)। পীরগঞ্জ উপজেলায় রায়পুর ইউনিয়নের বাহাদুরপুর গ্রামের তার জন্ম হলেও দারিদ্রতার কারণে ও তার স্ত্রী অন্ধ মনিন্দ্রনাথকে ফেলে রেখে অন্যর ঘরে চলে যাওয়ায় তার জীবনে অমানিশার অন্ধকার নেমে আসে।
জীবনের হতাশা ও বাস্তবার কারণে হাতে তুলে নেয় ডুগডুগি। গানই হয়ে উঠে তার জীবনের বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ১৯৭৪ সাল থেকে গান গাওয়া শুরু করলেও তার স্ত্রী চলে যাওয়ার পর গান তাকে আরও বেশি আপন করে নেয়। শুরু হয় তার জীবনের করুন পরিণতি। গান গেয়ে দু-চার টাকা যা পায় তা দিয়েই অনাহারে অর্ধাহারে চলে তার জীবন।
একপর্যায়ে ১৯ বছর আগে তার আশ্রয় হয় বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার বিহার ইউনিয়নের বিলের পার গ্রামে তার পালিত মেয়ে বিশখার বাড়িতে।
শ্যামল বর্ণের মাঝবয়সী অন্ধ প্রতিবন্ধী মনিন্দ্রনাথ ডুগডুগি বাজিয়ে মনের সুখে উপজেলার হাটে বাজারে ও পথে প্রান্তরে গান গেয়ে ঘুরে ফেরে তিনি। তার গানে মুগ্ধ হয়ে গান পাগল মানুষ পথিক শিল্পীকে যে অর্থ পায় তা দিয়ে চলে তার সংসার।
পথিক শিল্পী মনিন্দ্রনাথ বলেন, ১৯৭৪ সাল থেকে আমি গান গেয়ে বেড়াই। পথে পথে গান গেয়ে পরিবারে সদস্যদের মুখে একবেলা একমুঠো খাবার তুলে দেওয়ার চেষ্টা করি। আমি অন্ধ হওয়ার কারণে কোন কাজ করতে পারি না। আমি ডুগ ডুগি নিয়ে গান বাজনা করে নিজের দুঃখ কষ্ট লাঘব করার চেষ্টা করি।
অন্ধ হওয়ার কারণে কাজ কর্ম করতে না পারলেও সে পথিক শিল্পী হিসাবে গান করে চলে তার জীবন। তিনি ইতিপূর্বে টিভিতেও পথিক শিল্পী হিসাবে গান করেছেন। এখন তার ভাগ্যের কোন পরিবর্তন হয় নাই।
শিবগঞ্জের প্রবীন সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব বাবু রতন কুমার রায় বলেন, এক সময় মনিন্দ্রনাথ বর্মণ টিভিতেও গান করেছে। কিন্তু তার ভাগ্যের চাঁকা আজও ঘুরেনি। তিনি এখনও শিবগঞ্জ উপজেলার হাট বাজারে পথে প্রান্তরে গান গেয়ে কোন রকম জীবন যাপন করছে। সমাজের বৃত্তবানদের উচিত এই অন্ধ পথিক শিল্পীর পাশে দাঁড়ানো।
Posted ৬:৩৫ অপরাহ্ণ | শনিবার, ১১ নভেম্বর ২০২৩
Alokito Bogura || Online Newspaper | Sazu Mia