বুধবার ৪ঠা অক্টোবর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ১৯শে আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

শিরোনাম
শিরোনাম

জনপ্রিয় আলোর উৎস হ্যাজাক লাইট এখন বিলুপ্ত প্রায়

সাজু মিয়া, শিবগঞ্জ (বগুড়া) প্রতিনিধি   বৃহস্পতিবার, ২৬ মে ২০২২
521 বার পঠিত
জনপ্রিয় আলোর উৎস হ্যাজাক লাইট এখন বিলুপ্ত প্রায়

উপজেলার গ্রামাঞ্চলের প্রায় সব এলাকায় ছিলো হ্যাজাক লাইট। বাড়িতে কোন অনুষ্ঠান হলেই বাড়তো এর চাহিদা। সারাদিন চলতো অনুষ্ঠান আয়োজনের দৌরঝাপ। তারপর দিনের আলো ফুরিয়ে আসতেই সন্ধায় আলো জ্বালানোর জন্য ব্যবহার হত এই হ্যাজাক, বাড়ির সকলে মিলে চলতো হ্যাজাক জ্বালানোর প্রস্তুতি। হ্যাজাক জ্বালানোর সময় চারপাশে বসে বাড়ির ছোটরা অপেক্ষা করতো কখন জ্বলবে আলো। হ্যাজাকের আলো জ্বলে ইঠতেই বাঁধভাঙ্গা আনন্দে মূখরিত হতো গোটা বাড়ি। উপজেলার সর্বত্র বিদ্যুৎ চলে আসার পর থেকে হ্যাজাকের তেমন একটা কদর নেই। এভাবে কালের পরিবর্তনে হারিয়ে যেতে বসেছে এক সময়ের জনপ্রিয় প্রাচীনতম আলোর উৎস হ্যাজাক লাইট।

বিয়ে বাড়িতে, পূজা -পার্বণ, যাত্রাপালা, এমন কি ধর্ম সভায়ও জ্বালানো হতো এই হ্যাজাক লাইট। হ্যাজাক দেখতে অনেকটা হ্যারিকেনের মতোই কিন্তু আকারে বেশ বড়। আর প্রযুক্তিও ভিন্ন রকম। জ্বলে পাম্প করে কেরোসিনের কুকারের মতো একই প্রযুক্তিতে। চুলার বার্নারের বদলে এতে আছে ঝুলন্ত একটা সলতে। যেটা দেখতে প্রায় ১০০ ওয়াটের সাদা বাল্বের মতো। এটি অ্যাজবেস্টরে তৈরি। যতক্ষন তেল থাকবে এটা পুরে ছাঁই হয়ে যায় না।


এই বাতির ব্যবহার অতি প্রাচীন। বর্ষায় এবং শীতের শুরুতেই যখন নদী-নালায় পানি কমতে থাকে তখন রাতের বেলায় হ্যাজাক লাইট জ্বালিয়ে অনেকে মাছ শিকার করে। বর্তমানে প্রযুক্তির ছোঁয়া লেগেছে সবখানেই। ফিলামেন্ট বাতির বদলে বর্তমানে এলইডি বাতির চল শুরু হয়েছে। প্রযুক্তির কারনে বর্তমানে বাতিও হয়েছে স্মার্ট।

হ্যাজাকে পাম্প করা তেল একটা নলের ভিতর দিয়ে গিয়ে স্প্রে করে ভিজিয়ে দেয় সলতেটা। এটা জ্বলতে থাকে চেম্বারে যতক্ষণ তেল আর হাওয়ার চাপ থাকে ততক্ষণ। তেলের চেম্বারের চারিদিকে থাকে চারটি বোতাম। একটি পাম্পার। একটি অ্যাকশন রড় ও একটি হাওয়ার চাবি। আর একটি অটো লাইটার বা ম্যাচ। অ্যাকশন রড়ের কাজ হচ্ছে তেল বের হওয়ার মুখটা পরিষ্কার রাখা । হাওয়ার চাবি দিয়ে পাম্পারে পাম্প করা বাতাসের চাপ কমানো বা বাড়ানো হয়। একবার হাওয়া দিলে জ্বলতে থাকে কয়েক ঘন্টা আর ডের থেকে দুই লিটার তেলে জ্বলত সারা রাত।


উপজেলার হ্যাজাক লাইট মেরামতকারি জামাল উদ্দিন জানান, স্বাধীনতার পর থেকে আমাদের এলাকায় হ্যাজাকের ব্যবহার যতেষ্টো ছিল। তখন হ্যাজাক লাইট ঠিক করে আয় ভাল হত। দিন ৮-১০টি করে হ্যাজাক লাইট মেরামত করে ২০০-৩০০ টাকা পর্যন্ত রোজগার করতাম। সে সময় আমার ছয়টা হ্যাজাক ছিলো। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ওই হ্যাজাক গুলো ভাড়া দিতাম, ভালো আয় হতো আমার কিন্তু বর্তমানে হ্যাজাক লাইট নেই বললেই চলে। তাই এখন পেশা পরিবর্তন করে সাইকেল-রিক্সা মেরামতের কাজ করি।

Facebook Comments Box


Posted ১২:০১ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২৬ মে ২০২২

Alokito Bogura || আলোকিত বগুড়া |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০৩১  

প্রতিষ্ঠাতা ও প্রকাশক:

এম.টি.আই স্বপন মাহমুদ

বার্তা সম্পাদক: এম.এ রাশেদ

সহ-বার্তা সম্পাদক: মোঃ সাজু মিয়া

অস্থায়ী অফিস:

তালুকদার শপিং সেন্টার (৩য় তলা),

নবাববাড়ি রোড, বগুড়া-৫৮০০।

বার্তাকক্ষ যোগাযোগ:

মুঠোফোন: ০১৭৫০ ৯১১৮৪৫

ইমেইল: alokitobogura@gmail.com

বাংলাদেশ অনলাইন নিউজ পোর্টাল এসোসিয়েশন কর্তৃক নিবন্ধিত।
তথ্য মন্ত্রণালয়ের বিধি মোতাবেক নিবন্ধনের জন্য আবেদিত।
error: Content is protected !!