গাবতলী (বগুড়া) প্রতিনিধি: বগুড়ার গাবতলীতে নিন্মমানের ইট দিয়ে চলছে রাস্তার সংস্কার কাজ। যেন দেখার কেউ নেই। নিন্মমানের ইটের কাজ বন্ধের জন্য সংশ্লিষ্ঠ দপ্তরে নেপালতলীর সাবাসপুর ও কালুডাঙ্গা এলাকাবাসী অভিযোগ করেছেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে নিন্মমানের ইট সরিয়ে নিতে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে চিঠি দিয়েছেন উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর। কিন্তু এরপরও চিঠির কোন কর্ণপাত না করে এই নিন্মমানের ইট ব্যবহার করে যাচ্ছেন এই ঠিকাদার।
জানা গেছে, গাবতলীর সুখানপুকুর হতে নেপালতলীর সাবাসপুর পর্যন্ত পাকা সড়কটি একটি জনগুরুত্বপূর্ণ সড়ক। এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন শত শত যানবাহন চলাচল করে থাকে। ছোট ছোট যানবাহনের পাশাপাশি ভাড়ী যানবাহনও চলাচল করে এই রাস্তায়। রাস্তাটি দীর্ঘদিন আগে নির্মিত হওয়ায় রাস্তার কার্পেটিং উঠে গিয়ে খানা খন্দরে পরিনত হয়েছে অনেক আগেই। তাই এই জনগুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটি সংস্কার করার জন্য বর্তমান সরকারের জিওবি মেন্টেনেন্স প্রকল্পের অর্থায়নে ও উপজেলা এলজিইডির বাস্তবায়নে এক কোটি ৩১লাখ টাকার একটি প্রকল্প হাতে নেয়। এরই ধারাবাহিকতায় গত বছরের ডিসেম্বর মাসে রাস্তাটি সংস্কারের জন্য টেন্ডার আহবান করেন। এই টেন্ডার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে রাস্তাটির সংস্কার (কার্পেটিং) কাজ পায় বগুড়ার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স মাহিন এন্টারপ্রাইজ। ইতিমধ্যে মেসার্স মাহিন এন্টারপ্রাইজের স্বত্তাধিকারী গোলাম রব্বানী কাজটি শুরু করেছেন। কাজের শুরুতেই তিনি রাস্তার দু’পাশের এজিং উঠিয়ে ফেলে পুরাতন ইটের পাশাপাশি একেবারে নিন্মমানের ইট ব্যবহার করছেন। এছাড়াও সড়কটি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে মাটি ও পুকুরের ধারে সিডিউল অনুযায়ী মোট ৬০মিটার গাইড ওয়াল নির্মাণের
নির্দেশ রয়েছে। কিন্তু ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান গাইড ওয়াল কিংবা রাস্তার পাশে ভাঙ্গা স্থানে মাটি না দিয়েই কোন রকমে তিনি এজিং এর কাজ করে যাচ্ছেন।
নিন্মমানের ইটের কাজ বন্ধের জন্য ছবিসহ জেলার নির্বাহী প্রকৌশলীর দপ্তরে নেপালতলীর সাবাসপুর ও কালুডাঙ্গা এলাকাবাসী অভিযোগ করেছেন। কিন্তু তারপরও বন্ধ হচ্ছে না নিন্মমানের ইট ব্যবহার। এতে করে ফুঁসে উঠেছেন স্থানীয় এলাকাবাসী।
এলাকাবাসী বলছেন, জীবনে কোন দিন দেখিনি যে রাস্তা সংস্কার কাজে এতো নিন্মমানের ইট ব্যবহার হয়। এই নিন্মমানের ইট ব্যবহারের ফলে রাস্তার স্থায়ীত্ব টেকসই হবে না। ভারী ও হালকা যানবাহন চলাচল করা শুরু হলেই খুব অল্প সময়ের মধ্যেই দু’ধারের এজিং এর ইট ভেঙ্গে রাস্তাটি আবারও নষ্ট হয়ে যাবে। তাই অতিদ্রুত এই ইট সরিয়ে নিয়ে ভালো মানের ইট স্থাপনের দাবী এলাকাবাসীর।
এ বিষয়ে নেপালতলী ইউপি চেয়ারম্যান শহীদুল ইসলাম বাবুর সঙ্গে কথা বললে তিনি আলোকিত বগুড়া’কে জানান, সরকারের টেকসই উন্নয়ন ব্যহত করতেই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নিন্মমানের ইট ব্যবহার করছে। সরকারের টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে সিডিউল অনুযায়ী রাস্তাটি সংস্কার কাজ করার দাবী জানান তিনি।
এ প্রসঙ্গে মেসার্স মাহিন এন্টারপ্রাইজের স্বত্তাধিকারী গোলাম রব্বানী গত ২১ ফেব্রুয়ারী দুপুর ২টা ২৬ মিনিটে মোবাইল ফোনে বলেন, কাজ দেখার দায়িত্ব আপনাদের নয়। ওটা অফিস দেখবে। আপনাদের যদি ৫’শ ১ হাজার টাকা লাগে তাহলে নিয়ে যান। না হলে পেপারে ছাপায়ে দেন।
এ ব্যাপারে স্থানীয় উপজেলা প্রকৌশলী সাজেদুর রহমান বলেন, এলাকাবাসীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে চিঠি এবং মোবাইল ফোনে ব্যবহৃত নিন্মমানের ইট সরিয়ে নিতে বলা হয়েছে। তারপরও যদি না সরিয়ে নেয় তাহলে ওই কাজের বিল দেয়া হবে না।
Posted ১১:৩৪ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
Alokito Bogura || আলোকিত বগুড়া | MTi SHOPON MAHMUD