কুড়িগ্রামে জেলা আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে সেবাগ্রহীতা এক নারীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে পাসপোর্ট অফিসের উপ-সহকারী পরিচালক আব্দুল মোত্তালেব সরকারের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় শহরজুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। মঙ্গলবার বিকালে কুড়িগ্রাম জেলা আঞ্চলিক অফিসে এই ঘটনা ঘটে।
ঘটনার পরপর উপস্থিত লোকজন ৯৯৯-এ ফোন করে সহায়তা চাইলে ওই নারীকে উদ্ধার করে থানায় নেয় পুলিশ। তবে অভিযুক্ত কর্মকর্তাকে আটক করা হয়নি।
জানা গেছে, ২১ ডিসেম্বর ২০২১ তারিখ সকালে কুড়িগ্রাম আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে আসলে দুপুর গড়িয়ে গেলে কুড়িগ্রাম পাসপোর্ট অফিসের আঞ্চলিক কর্মকর্তা আব্দুল মোত্তালিব সরকার একই ভবনের আবাসিক ৩য় তলায় স্বাক্ষরের জন্য ডাকেন। মেয়েটি ঘরে ঢোকামাত্র ওই কর্মকর্তা দরজার সিটকিনি লাগিয়ে মেয়েটিকে ধর্ষণের চেষ্টা করে এবং মেয়েটির স্পর্শকাতর জায়গায় হাত দিয়ে শ্লীলতাহানি ঘটায়। পরে মেয়েটি আত্মচিৎকার করলে তার সাথে আসা অটো চালক ভাই এবং অন্যান্য সেবাগ্রহীতারা এগিয়ে এসে দরজা ভেঙে মেয়েটিকে উদ্ধার করে নিচ তলায় এডিকে নিয়ে এসে অবরুদ্ধ করে। পরে তারা ৯৯৯ এ কল দিলে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে ঘন্টাব্যাপী তদন্ত করেন। এক পর্যাযে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার উৎপল কুমার রায় এবং সদর থানার অফিসার ইনচার্জ খান মোঃ শাহরিয়ার ঘটনাস্থলে এসে দুই ঘন্টাব্যাপি তদন্ত ও ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে মেয়েটি এবং ৩জন স্বাক্ষীসহ থানায় নিয়ে যান।
অপরদিকে, তদন্তের স্বার্থে কুড়িগ্রাম আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের উপ-সহ: পরিচালক আব্দুল মোত্তালিবকে পুলিশি প্রহরায় তার নিজ অফিসে নজরদারিতে রাখেন।
এ বিয়য়ে ভুক্তভোগী নারী ঘটনার পর উপস্থিত সাংবাদিকদের অভিযোগ করে জানান, প্রায় দেড় মাস আগে তিনি একটি পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেন। স্বামী বিদেশে অবস্থান করায় তিনি নিজেই এ আবেদন করেন। কিন্তু আবেদনে সমস্যা আছে জানিয়ে পাসপোর্ট কর্মকর্তা মোত্তালেব তাকে ফোন দিয়ে অফিসে আসতে বলেন।
ভুক্তভোগী নারী আরও জানান, মঙ্গলবার তিনি পাসপোর্ট অফিসে এসে মোত্তালেব সরকারের সঙ্গে দেখা করেন। মোত্তালেব তাকে অফিসের ৩য় তলার একটি কক্ষে যেতে বলেন। ওই কক্ষে তার আবেদনপত্র সংশোধন করতে হবে বলে জানান। সেখানে গেলে মোত্তালেব কক্ষে ঢুকে ভেতর থেকে দরজা লাগিয়ে দেন এবং তাকে যৌন হয়রানি করেন।
এদিকে, এ ঘটনা পূর্ব পরিকল্পিত ও সাজানো বলে দাবি করেছেন অভিযুক্ত উপ-সহকারী পরিচালক আব্দুল মোত্তালেব সরকার।
তবে ওই নারীকে ফোন দিয়ে ডাকার কথা স্বীকার করে মোত্তালেব বলেন, ‘অফিস থেকে ফোন দিয়ে তার সনদ জমা ও স্বাক্ষর দিতে বলা হয়েছে। তিনি আজ এসে সেগুলো দিয়ে যান। কিন্তু তিনি আবার ফিরে এসে ২৫ তারিখের মধ্যে পাসপোর্ট দেওয়ার দাবি করেন। পরে তিনি এই সিনক্রিয়েট করেন।’ ওই নারীকে কেন তিন তলায় পাঠিয়ে আপনি কক্ষে প্রবেশ করলেন, এমন প্রশ্নে এই কর্মকর্তা বলেন, ‘আমি ওই কক্ষে যাইনি।’
এ ব্যাপারে কুড়িগ্রাম সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খান মোহাম্মদ শাহরিয়ার বলেন, ‘আমরা ওই নারীর অভিযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। এ ঘটনার ভিন্ন কোনো উদ্দেশ্য আছে কিনা আমরা তাও খতিয়ে দেখছি। মেয়েটি অভিযোগ না করায় আমরা কিছু করতে পারছি না। তবে মেয়েটি যখনই লিখিত অভিযোগ করবে তখনই আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেবো।
Posted ৮:১৯ অপরাহ্ণ | বুধবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২১
Alokito Bogura। Online Newspaper | MTi SHOPON MAHMUD