গুজি তিল আমাদের দেশের একটি অপ্রধান তেল ফসল। কুড়িগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় কৃষকদের মুখে এটি কুজি তিল নামে পরিচিত। জেলার নাগেশ্বরী উপজেলার নুন খাওয়া ইউনিয়নের দুধ কুমোর নদীর বিস্তৃত চরাঞ্চলে তিন একর জায়গাজুড়ে গুজি তিলের চাষ করে ভাগ্যবদলের স্বপ্ন দেখছেন তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা সিরাজউদদৌলা। গুজি তিল গাছ সাধারণত সবুজ ও বেগুনী রংয়ের হয়। ফুল ছোট ও হলুদ রংয়ের। বীজ সূচাকৃতির এবং ১.২৫ সে.মি. পাতলা ও বেশ মসৃন। ১০০০ (একহাজার) বীজের ওজন ৩-৪ গ্রাম। ১০০ কেজি গুজি তিল হতে ৪২ থেকে ৪৫ কেজি ভোজ্য তেল পাওয়া যায়।
কোন ধরনের প্রশিক্ষণ ছাড়াই পরীক্ষামূলক পলিবেস্টিত বেলে মাটিতে বীজ ছিটিয়ে এই কৃষক এখন লাভের আশা করছেন। অন্যান্য তেল বীজ জাতীয় ফসলের পাশাপাশি গুজি তিলের চাহিদা রয়েছে স্থানীয় বাজারে। পাইকারী দরে প্রতি মণ গুজি তিল বিক্রি হয় ৫ হাজার টাকায়। গুজি তিল প্রায় সব ধরনের মাটিতে চাষ করা যায়। তবে দো-আঁশ এবং বেলে দো-আঁশ মাটি এই ফসলের জন্য উপযোগী।
এই তিল চাষে জমিতে তেমন কোন সেচের প্রয়োজন নেই তবে ফলন ভালো পেতে জৈব ও রাসায়নিক সারের প্রয়োজন পড়ে। আশি^ন-কার্তিক মাসে বীজ ছিটিয়ে ১০৫-১১০ দিনের মধ্যে ফসল তোলা যায়। মাটি ভালো হলে হেক্টর প্রতি ফলন ১.০৫ থেকে ১.১০ টন পর্যন্ত হতে পারে।
কৃষি উদ্যোক্তা সিরাজ উদ-দৌলা বলেন, কুড়িগ্রামের চরাঞ্চলের চাষীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে এ ফসলকে অধিকতর গুরুত্ব সহকারে চাষাবাদ করা হলে আমাদের ভোজ্য তেলের ঘাটতি পূরণের পাশাপাশি রপ্তানি যোগ্য পণ্য হতে পারে গুজি তিল। উত্তর-পূর্ব আফ্রিকার দেশ ইরিত্রিয়া, ইথিওপিয়া ও ভারতের দক্ষিণ অঞ্চলে গুজি তিলের চাষ ব্যাপক জনপ্রিয়।
এ বিষয়ে কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের জেলা প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা শামসুদ্দিন মিঞা জানান, কোলেস্টেরল ফ্রি গুজির ভোজ্য তেল উচ্চ পুষ্টিমানের এবং শরীরের অনেক রোগের জন্য উপকারী। ভোজ্য তেল হিসেবে ব্যবহার ছাড়াও সাবান ও প্রসাধনী তৈরিতে এর ব্যবহার হয়। এর খৈল গো-মহিষের খুব উপাদেয় খাদ্য। গুজি তিল ঘানী বা এক্সপেলারে ভাঙিয়ে অন্যান্য তেলের ন্যায় রান্নার কাজে ব্যবহার করা যায়। অন্যান্য তেলের সাথে মিশিয়ে ব্যবহার করাও চলে।
Posted ৫:০৪ অপরাহ্ণ | সোমবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২
Alokito Bogura। Online Newspaper | MTi SHOPON MAHMUD