সিরাজগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য ডাঃ আব্দুল আজিজের ভাগ্নিকে বিয়ে করায় তাড়াশ উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শামীম আহম্মেদ আকাশ (২৬) কে মিথ্যা মামলায় ফাসানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তার পরিবার।
তাড়াশ উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শামীম আহম্মেদ আকাশ (২৬)।
জানা যায়, এমপি ডাঃ আব্দুল আজিজের ফুফাতো বোনের মেয়ে অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী মোছা: রাবেয়া বসরী (১৯) সাথে প্রায় এক বছর আগে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে উপজেলা সদরের ঘোষপাড়া মহল্লার মৃত শামসুল হক ভুট্টুর ছেলে ও তাড়াশ উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শামীম আহম্মেদ আকাশের। এরপর তাদের সেই প্রেমের সম্পর্ক গড়ায় বিয়েতে। প্রায় ৫ মাস আগে বিয়েও করেছেন তারা।
অপহরণ মামলায় বুধবার (২ মার্চ) ভোরে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানা পুলিশের একটি টিম তাড়াশ সদরের ঘোষপাড়া মহল্লার শামীম আহম্মেদ আকাশের নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠায়। এ ঘটনায় শনিবার (৫ মার্চ) উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে তাকে অব্যাহতি দিয়েছে জেলা ছাত্রলীগ।
এ বিষয়ে শামীম আহম্মেদ আকাশের মামা লিটন আহমেদ বলেন, আমার ভাগ্নের বিরুদ্ধে সব অভিযোগ মিথ্যা। ছেলে এবং মেয়ে দুইজনেই প্রাপ্ত বয়সী, তারা প্রথমে প্রেম ও পরে বিয়ে করেছে। এখানে অপহরণের কিছুই নেই। মেয়ের ভাই বিপ্লব মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাদের হয়রানির করছে। ওই তরুণী স্থানীয় সংসদ সদস্য ডাঃ আজিজের আত্মীয় হওয়ায় অপহরণ মামলার পেছনে তার হাত রয়েছে বলেও জানান তিনি।
শামীম আহম্মেদ আকাশের মা মোনায়ারা খাতুন মিনি বলেন, আমার ছেলের সাথে স্থানীয় সংসদ সদস্য ডাঃ আব্দুল আজিজের ফুফাতো বোনের মেয়ের সাথে বিয়ে কথা আমি যখন জানলাম তখন এমপি আজিজকে বিষয়টি অবগত করি। পরে এমপি মহোদয় তার ফুফাতো ভাই সগুনা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল বাকীকে বিষয়টি দেখতে বলেন। পরবর্তীতে আমি একাধিকবার আব্দুল্লাহ আল বাকীর সাথে কথা বলার চেষ্টা করেছি কিন্তু সে কথা বলেনি। আমার ছেলে এমপির ভাগ্নিকে অপহরণ করেননি। তারা দুইজনই প্রাপ্ত বয়সী, তাদের নিজ ইচ্ছাতেই তারা বিয়ে করেছে। তাহলে আমার ছেলে বিরুদ্ধে কেন অপহরণ মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হলো।
রাবেয়া বসরীর ভাই মামলার বাদী বিপ্লব হোসেনকে একাধিকবার ফোন করলেও সে ফোন রিসিভ করেননি।
তাড়াশ উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি রুবেল আহমেদ বলেন, তাড়াশ-রায়গঞ্জ-সলঙ্গা আসনের সংসদ সদস্য ডাঃ আব্দুল আজিজের ভাগ্নির সাথে উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শামীম আহম্মেদ আকাশ প্রেম করে বিয়ে করেছেন। দুইজনই প্রাপ্ত বসয়ী, তারা নিজ ইচ্ছাতেই বিয়ে করেছেন। এখানে অপহরণের কোনো ঘটনাই ঘটেনি। কিন্তু মেয়ের ভাই বাদী হয়ে ছাত্রলীগ নেতাকে ফাসাতেই এই মিথ্যা মামলা করেছে।
তাড়াশ উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ইকবাল হাসান রুবেল বলেন, তাড়াশ উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শামীম আহম্মেদ আকাশের সাথে ওই মেয়ের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। পরে শুনেছি তারা বিয়ে করেছে। তবে মামলার পিছনে আমাদের এমপি মহোদয়ের হাত আছে কিনা তা আমার জানা নেই।
সগুনা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল বাকী বলেন, তাড়াশ উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শামীম আহম্মেদ আকাশ আমাদের মেয়েকে অপহরণ করেছে। একটি অপহরণ মামলা দায়ের করলে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। আইনের মাধ্যমে যা হয় হবে। মেয়ে যদি থানায় জবানবন্দি দিয়ে থাকে তাহলে সে বিষয়টি আমার জানা নেই বলে সে ফোন কেটে দেয়।
ঢাকার মোহাম্মদপুর থানার এসআই সাদিকুল ইসলাম বলেন, অপহরণ মামলায় তাড়াশ উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শামীম আহম্মেদ আকাশকে মোবাইল ট্যাকিংয়ের মাধ্যমে গ্রেফতার করা হয়েছে। এসময় ওই কলেজছাত্রীকে উদ্ধার হয়। তবে ওই কলেজছাত্রী থানায় জবানবন্দি দিয়েছে তার নিজ ইচ্ছেতেই শামীম আহম্মেদ আকাশকে বিয়ে করেছে। তাকে কেউ অপহরণ করেননি।
সিরাজগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আহসান হাবিব খোকা বলেন, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে তাকে অবহতি দেওয়া হয়েছে। এবিষয়ে কেন্দ্রীয় নেতারা সিদ্ধান্ত নিবেন।
এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ-৩ (রায়গঞ্জ-তাড়াশ-সলঙ্গা) আসনের সংসদ সদস্য ডাঃ আব্দুল আজিজ মুঠোফোনে বলেন, রাবেয়া বসরী আমার আত্নীয় হয়, কিন্তু এ বিষয়ে দুই পরিবারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কেউ আমাকে জানায়নি। এ বিষয়ে আমি অবগত নেই। পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করেছে। এটা তাদের বিষয় এখানে আমার জড়িত থাকার প্রশ্ন ওঠেনা।
Posted ১১:৪৫ অপরাহ্ণ | রবিবার, ০৬ মার্চ ২০২২
Alokito Bogura। Online Newspaper | MTi SHOPON MAHMUD